
১লা মে থেকে ৪ঠা মে, ২০২৫-এ নয়ডার ওয়াইএসএস আশ্রমে যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া-র সর্বপ্রথম যুব পরিষেবা স্বেচ্ছাসেবক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এখানে সমস্ত ওয়াইএসএস আশ্রম ও ভারতজুড়ে ৪০টির অধিক কেন্দ্র থেকে অভিজ্ঞ এবং সেবাকার্যে অনুপ্রাণিত নবাগত – উভয় প্রকার স্বেচ্ছাসেবকসহ ১২৫ জন ভক্ত উপস্থিত ছিলেন।
ওয়াইএসএস সন্ন্যাসীদের দ্বারা নির্দেশিত এই চারদিনের কর্মশালা যুব পরিষেবা বিভাগের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য পূরণের জন্য স্বেচ্ছাসেবকদের একত্রিত করতে এবং শিশু, কিশোর ও তরুণ সাধক (বয়স ১৮ থেকে ৩৫) – পরমহংস যোগানন্দের শিক্ষায় নিবেশিত সকলকেই পরিষেবা প্রদানের জন্য তাদের প্রশিক্ষিত করতে আয়োজিত হয়েছিল।
“এই প্রশিক্ষণটি অনন্য এবং আপনি একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যোগদান করতে চাইলে তা আপনাকে গভীর সাধনা এবং ঈশ্বর ও গুরুর সাথে সমন্বয়সাধনেও সহায়তা করবে, আর এটাই সেই বিশেষ প্রশিক্ষণ!”
—কে.এম, মহারাষ্ট্র





ওয়াইএসএস সন্ন্যাসীগণ ও অভিজ্ঞ স্বেচ্ছাসেবকরা এই প্রশিক্ষণ পর্বটি পরিচালনা করেন, সেই সঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের পরামর্শ প্রদান করেন। তাঁরা নবগঠিত বিভাগের পাঁচটি ক্ষেত্রজুড়ে উপলব্ধ বিভিন্ন সেবার সুযোগের সঙ্গেও পরিচিতি করান:
- সম্প্রদায় ও যোগাযোগ,
- প্রশিক্ষণ ও বিষয়বস্তু,
- কর্মসূচি ও কার্যসমূহ,
- ওয়াইএসএস কেন্দ্রগুলোতে যুব পরিষেবা কর্মসূচির উন্নয়ন, এবং
- স্বেচ্ছাসেবক সমন্বয়।
“প্রত্যেক অধিবেশনে গুরুদেবের শিক্ষাকে সমন্বিত করতে শেখার এক অপূর্ব সুযোগ — যা একে শিশুদের জন্য আরও প্রাণবন্ত, অর্থপূর্ণ, আনন্দদায়ক ও কার্যকরী করে তোলে।”
—এস. এন., ঝাড়খন্ড
একটি সুষম কর্মসূচি
উদ্বোধনী দিবসে একটি তিন ঘন্টার ধ্যান পর্ব ও প্রত্যহ তিনবার সমবেত ধ্যান প্রতিটি দিনের কর্মসূচিতে এক নির্মল ও সুগ্রাহী আবহ প্রদান করে।
অংশগ্রহণকারীরা শিক্ষালাভ করেছিল যে সাধনা ও সেবার সমন্বয় একজন ভক্তের আধ্যাত্মিক জীবনে অপরিহার্য — আর এই সুষম জীবনযাপন তাদের দ্বারা সেবিত যুবসমাজের জন্য একটি শক্তিশালী উদাহরণ স্থাপন করে।

শিক্ষার দুটি ধারা: শিশু ও কিশোর সৎসঙ্গ
এই কর্মশালা দুটি কেন্দ্রীভূত শিক্ষা ধারার ব্যবস্থা করেছিল — শিশু সৎসঙ্গ (সিএস) এবং কিশোর সৎসঙ্গ (টিএস) — অংশগ্রহণকারীগণকে তাদের আগ্রহ ও পূর্ব অভিজ্ঞতা অনুসারে দলবদ্ধ করা হয়।
প্রতিটি বিভাগের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবকদের সুচিন্তিতভাবে দলবদ্ধ করা হয়েছিল যাতে তারা মুক্ত আদানপ্রদান এবং গভীরতর বন্ধন গড়ে তুলতে উৎসাহিত হয়। প্রশিক্ষণে কার্যকরী সৎসঙ্গ পরিচালনার মূল নীতিগুলি: ঈশ্বরকেন্দ্রিক অধিবেশন, গুরুদেবের শিক্ষার পবিত্রতা রক্ষা এবং প্রেম, আনন্দ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এর অন্তর্ভুক্ত ছিল।
স্বেচ্ছাসেবকগণ শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের (৬-১৭ বছর বয়সী) আধ্যাত্মিকভাবে সমৃদ্ধ ও সৃজনশীল পদ্ধতির মাধ্যমে সংযুক্ত করার সর্বোত্তম প্রক্রিয়াসমূহ ব্যক্ত করেছেন। মুখ্য বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে গল্প বলার প্রত্যক্ষ প্রদর্শন, ধ্যান পরিচালনার ব্যবহারিক নির্দেশনা এবং অধিবেশন পরিকল্পনার হাতে-কলমে অনুশীলন — যা সবকিছুই তরুণ মন ও হৃদয়ের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রস্তুত করা হয়েছে।


“অধিবেশনের প্রস্তুতির জন্য ব্যবহৃত মূল নীতিসমূহ সত্যিই মূল্যবান এবং “প্রেম ও উপলব্ধি”-র ওপর গুরুত্ব আরোপ সত্যিই চমৎকার। কার্যত, সম্পূর্ণ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাটি সুপরিচালিত। এই মহৎ প্রচেষ্টার জন্য আমি প্রকৃতই কৃতজ্ঞ এবং এর বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই।”
—এস.এল., তামিলনাড়ু
“এটি আমাদের একটি অধিবেশনের প্রত্যেকটি অংশ সম্বন্ধে আরও সুগঠিতভাবে চিন্তা করার একটি উত্তম সুযোগ [প্রদান] করে যা গুরুদেবের শিক্ষা আত্মভূত করতে সহায়তা করবে এবং শিশু সৎসঙ্গের অধিবেশনে তা আরও দক্ষতার সঙ্গে প্রদর্শিত হবে।”
—এস.এস., পশ্চিমবঙ্গ

“এই অধিবেশনে ‘আকর্ষণীয় ও নিবেশিত ধ্যানের অভ্যাস গঠন’ বিস্ময়কর ছিল। এটি শিশুদের জন্য ধ্যান পরিচালনার এক চমৎকার উদাহরণ ছিল।”
—এন.পি., উত্তরপ্রদেশ
যুব পরিষেবায় সেবাপ্রদানের নির্দেশিকা
কর্মশালাটির শেষের দিকে স্বামী শঙ্করানন্দ ও বরিষ্ঠ স্বেচ্ছাসেবকগণ যুব কর্মসূচি পরিচালনার মুখ্য নির্দেশিকাসমূহ প্রদান করেন — এক সুরক্ষিত ও আধ্যাত্মিকভাবে লালিত পরিবেশের নিশ্চিতকরণ যেখানে শিশু ও কিশোররা তাদের ঈশ্বরপ্রেম বর্ধিত করতে পারে।
যুব পরিষেবা বিভাগের পাঁচটি ক্ষেত্রে অনুসন্ধান এবং তারা যে ক্ষেত্রে সর্বাধিক অনুপ্রাণিত হয়েছে সেখানে সেবাপ্রদানের জন্য নিবন্ধীকরণের উদ্দেশ্যে অংশগ্রহণকারীদের সাহায্য করার জন্য একটি স্বেচ্ছাসেবী সেবার সুযোগের ডেস্ক গঠিত হয়।


প্রশিক্ষণকে গৃহে নিয়ে যাওয়া
অন্তিম দিনে স্বেচ্ছাসেবকরা নিজ শহরে প্রত্যাবর্তনের পর যুব পরিষেবার সম্প্রসারণে পরবর্তী কী পদক্ষেপ নিতে পারেন তা বর্ণনা করা হয়েছিল। স্থানীয় কেন্দ্রগুলোতে যুব পরিষেবার প্রতিপালন ও পরিবর্ধনের ওপর সমন্বয়পূর্ণ দলবদ্ধ কার্যের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ নির্দেশ প্রদান করা হয়েছিল।
স্বামী স্মরণানন্দ গিরি পরিচালিত সমাপ্তি সৎসঙ্গে, আধ্যাত্মিক অভিভাবকত্ব এবং দিব্য আদর্শের আলোয় তরুণ প্রজন্মকে পথনির্দেশের মাধ্যমে পবিত্র দায়িত্ব পালনের প্রজ্ঞা আলোচিত হয়েছিল।
কর্মশালাটি সমবেত ভজনপর্ব ও নবগঠিত যুব পরিষেবা বিভাগের সাফল্যের জন্য ঐশ্বরিক আশীর্বাদ প্রার্থনার সংকল্প গ্রহণের সঙ্গে সমাপ্ত হয়েছিল।

“এই প্রশিক্ষণটি অনন্য এবং আপনি একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে যোগদান করতে চাইলে তা আপনাকে গভীর সাধনা এবং ঈশ্বর ও গুরুর সাথে সমন্বয়সাধনেও সহায়তা করবে, আর এটাই সেই বিশেষ প্রশিক্ষণ!”
—কে.এম., মহারাষ্ট্র
স্বেচ্ছাসেবকগণ এই আশীর্বাদধন্য প্রশিক্ষণের সুযোগ ও তরুণ প্রজন্মকে আত্মোপলব্ধির পথে দিকনির্দেশনার জন্য তাদের হৃদয় ও মনকে প্রস্তুত করার শিক্ষার অভিজ্ঞতার ওপর তাদের প্রশংসা জ্ঞাপন করেন।
“একটি সুপরিকল্পিত ও চিন্তাশীল কর্মশালা...এটি প্রকৃতপক্ষেই আমাদের গুরুদেবের কর্মপদ্ধতির প্রতিনিধিত্ব করে। কতটা তিনি আমাদের ও আমাদের ওয়াইএসএস-এর ছোটো শিশুদের সম্বন্ধে ভাবেন। আমরা আশীর্বাদধন্য যে গুরুদেব তাঁর কার্যের জন্য আমাদের ঐশ্বরিক সাধনরূপে নির্বাচিত করেছেন যা তাঁর হৃদয়ের খুব কাছের ছিল। এই অভিনব কর্মশালা পরিচালনার জন্য সকল সন্ন্যাসী ও স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। প্রশিক্ষণ, থাকার ব্যবস্থা, খাবার সবকিছুই নিখুঁত ছিল। সেজন্য এই অভিনব কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি আনন্দিত। আমার হৃদয় পরিপূর্ণ।”
—পি. এস., তামিলনাড়ু
পরবর্তী পদক্ষেপ
- যারা যুব পরিষেবায় স্বেচ্ছাসেবা প্রদানে ও পরবর্তী প্রশিক্ষণ পর্বে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক, তারা [email protected] -এ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য স্বাগত।
- ২০২৫-এর শেষদিকে দেশব্যাপী অনলাইন কিশোর সৎসঙ্গ কর্মসূচি প্রারম্ভের প্রস্তুতির জন্য কিশোর সৎসঙ্গ স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্দেশ্যে জুলাই-আগস্ট মাসে একটি অনলাইন প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
- অতিরিক্ত মূলগত প্রশিক্ষণ ও সহায়ককারীর দক্ষতা অর্জনের কর্মশালা এই বছরের পরবর্তীভাগে পরিকল্পিত হয়েছে।
যুব পরিষেবা সহায়কের প্রশিক্ষণ গ্রহণে ইচ্ছুকরা ভবিষ্যতে প্রশিক্ষণ পর্বে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য এই ফর্মটি পূরণ করতে পারেন।
গুরুদেবের আলোকে এই পবিত্র কার্য একত্রে অব্যাহত রাখার জন্য আমরা উন্মুখ।