১৯১৭-র জন্মলগ্ন থেকে ১৯৫২তে পরমহংস যোগানন্দজির মহাসমাধির আগে পর্যন্ত যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া/সেল্ফ-রিয়লাইজেশন ফেলোশিপের যাবতীয় কার্যকলাপ এবং সাংগঠনিক বিষয় পরমহংস যোগানন্দজির ব্যক্তিগত নির্দেশ অনুযায়ী হত। তারপর সেই কাজের নেতৃত্ব পরমহংসজির নির্বাচিত তাঁর একজন ঘনিষ্ঠ শিষ্য শ্রীশ্রী রাজর্ষি জনকানন্দ-র ওপর বর্তায়। ১৯৫২-র থেকে তিন বছর পর তাঁর দেহাবসানের আগে পর্যন্ত তিনি ওয়াইএসএস/এসআরএফ-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
শ্রীশ্রী দয়ামাতা ছিলেন যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া/সেল্ফ-রিয়লাইজেশন ফেলোশিপের তৃতীয় সভাপতি এবং আধ্যাত্মিক প্রধান। কুড়ি বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁকে যোগানন্দজি ব্যক্তিগতভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। ১৯৫৫-তে রাজর্ষি জনকানন্দের দেহাবসানের পর থেকে ২০১০-এ তাঁর নিজের দেহাবসানের আগে পর্যন্ত তিনি ওয়াইএসএস/এসআরএফ-এর অধ্যক্ষ এবং আধ্যাত্মিক প্রধান ছিলেন।
শ্রীশ্রী মৃণালিনী মাতা, শ্রী দয়ামাতার উত্তরসূরী হয়ে যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া/সেল্ফ-রিয়লাইজেশন ফেলোশিপের অধ্যক্ষ ও সঙ্ঘমাতা হয়েছিলেন। তাঁর দেহাবসানের পর কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ায় সহায়তা করার জন্য পরমহংস যোগানন্দজি তাঁকেও নিজেই নির্বাচন করেছিলেন এবং প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। এসআরএফ-এর একজন সন্ন্যাসী ভক্ত হিসেবে তাঁর সাত দশক ব্যাপী সময়কালে তিনি নেতৃত্বের বহু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ২০১১ সাল থেকে ২০১৭ সালে তাঁর দেহাবসানের আগে পর্যন্ত শ্রী মৃণালিনী মাতা ওয়াইএসএস/এসআরএফ-এর অধ্যক্ষ ও সঙ্ঘমাতার দায়িত্ব পালন করেছেন।

স্বামী চিদানন্দ গিরি বর্তমানে ওয়াইএসএস/এসআরএফ-এর অধ্যক্ষ এবং আধ্যাত্মিক প্রধান এবং বিগত ৪০ বছর ধরে সেল্ফ-রিয়লাইজেশন ফেলোশিপের একজন সন্ন্যাসী। তিনি তাঁর সন্ন্যাস জীবনের শুরুর দিক থেকেই শ্রী মৃণালিনী মাতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন এবং তাঁকে পরমহংস যোগানন্দজির বিভিন্ন রচনা ও এসআরএফ-এর অন্যান্য প্রকাশনার সম্পাদনা ও প্রকাশের কাজে সহায়তা করেছেন। ২০০৯-এ শ্রী দয়ামাতা তাঁকে ওয়াইএসএস এবং এসআরএফ-এর বোর্ড অফ ডিরেক্টরের একজন সদস্য পদে নিয়োগ করেন। এছাড়া তিনি পরিচালন কমিটির সদস্য হয়েও বহু বছর ধরে অধ্যক্ষের পরিচালনায় এসআরএফ-এর অগণিত কার্যকলাপ এবং কর্মকাণ্ডে সহায়তা করে এসেছেন।
অধ্যক্ষ হিসেবে কাজের ক্ষেত্রে যে বোর্ড অফ ডিরেক্টর স্বামী চিদানন্দজিকে সাহায্য করছেন তার মধ্যে অনেকে আছেন যাদের পরমহংসজির সাক্ষাৎ শিষ্যেরা প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।
যোগানন্দজির প্রচুর সাক্ষাৎ শিষ্য যাঁরা তাঁর ব্যক্তিগত সঙ্গ লাভ করেছিলেন, তাঁর দেহাবসানের পরেও তাঁরা ওয়াইএসএস/এসআরএফ আশ্রমেই নিজেদের বাকি জীবন কাটিয়েছেন, বিশ্বস্তভাবে সংগঠনের কাজে সাহায্য করেছেন এবং যোগানন্দজি যাঁদের নেতৃত্বের কাজে নিয়োগ করেছিলেন তাঁদের সহায়তা করেছেন। তাঁদের সম্বন্ধে জানুন।
বোর্ড অফ ডিরেক্টরের সমস্ত সদস্যরাই আমাদের সন্ন্যাস গোষ্ঠীর সদস্য, যাঁরা সারাজীবনের জন্য চূড়ান্ত ত্যাগের শপথ নিয়েছেন। তাঁরা এবং ওয়াইএসএস/এসআরএফ আশ্রমের সকল সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাসিনীরা পরমহংস যোগানন্দজি যে বিশেষ কাজ শুরু করেছিলেন সেই কাজে সম্পূর্ণভাবে নিজেদের জীবন সমর্পণ করেছেন।
প্রেসিডেন্ট ও বোর্ড অফ ডিরেক্টরের পরিচালনায় ওয়াইএসএস/এসআরএফ এর সন্ন্যাসী ও সন্ন্যাসিনীরা বিভিন্ন ভূমিকায় সোসাইটির আশ্রমকেন্দ্রতে সেবা করে থাকেন, তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বক্তৃতা দেন, ক্লাস নেন, নিভৃতাবাসে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন এবং যোগদা সৎসঙ্গ শিক্ষাপ্রণালীর ছাত্রছাত্রীদের জন্য ফোন, চিঠি বা ব্যক্তিগত ভাবে আধ্যাত্মিক উপদেশ প্রদান করেন।
ওয়াইএসএস/এসআরএফ এর অনেক নিষ্ঠাবান সাধারণ ভক্তরাও পরমহংস যোগানন্দজির বিশ্বব্যাপী কর্মকাণ্ডে অপরিহার্যভাবে সেবা করে চলেছেন — আন্তর্জাতিক সদরদপ্তরে এবং অন্যান্য ওয়াইএসএস/এসআরএফ আশ্রমকেন্দ্রে সন্ন্যাসীদের সঙ্গে সারা বিশ্বের আশ্রম এবং ধ্যানকেন্দ্রতে তাঁরা বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন।