ক্রিয়াযোগের ১৫০ বছর

ক্রিয়াযোগের পুনরুজ্জীবনের ১৫০তম বার্ষিকী

মহাবতার বাবাজি
মহাবতার বাবাজি
লাহিড়ী মহাশয়
লাহিড়ী মহাশয়
স্বামী শ্রীযুক্তেশ্বর
স্বামী শ্রীযুক্তেশ্বর
পরমহংস যোগানন্দ
পরমহংস যোগানন্দ

“ক্রিয়াযোগ, ঈশ্বরলাভের বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া, অবশেষে সমস্ত দেশে বিস্তৃত হবে এবং মানুষের ব্যক্তিগত, অতীন্দ্রিয় উপলব্ধির মাধ্যমে অনন্ত পিতার প্রত্যক্ষ দর্শনের দ্বারা জাতিসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধনে সহায়তা করবে।”

—মহাবতার বাবাজি

আধুনিক জগতের জন্য একটি আধ্যাত্মিক বিধান

২০১১ সালটি লাহিড়ী মহাশয়ের অমর গুরু মহাবতার বাবাজির সঙ্গে হিমালয়ের রানিখেত-এর নিকট প্রথম সাক্ষাৎ এবং ক্রিয়াযোগের পবিত্র বিজ্ঞানে তাঁর দীক্ষালাভের সার্ধশততম বার্ষিকীকে সূচিত করে।

সেল্ফ-রিয়লাইজেশন ফেলোশিপ-এর প্রতিষ্ঠাতা, পরমহংস যোগানন্দ তাঁর যোগী-কথামৃত গ্রন্থের মাধ্যমে এই দিব্য আশীর্বাদকে প্রথম বিশ্বের নজরে এনেছিলেন, যেখানে তিনি বলেছেন:

“এই মঙ্গলময় ঘটনা শুধুমাত্র লাহিড়ী মহাশয়ের জন্যই ঘটেনি; এটি ছিল সমগ্র মানবজাতির জন্য এক সৌভাগ্যপূর্ণ মুহূর্ত। লুপ্ত, অথবা দীর্ঘ-বিলুপ্ত, সর্বোচ্চ যোগবিদ্যা আবার প্রকাশিত হচ্ছিল।”

বাবাজি লাহিড়ী মহাশয়কে বলেছিলেন, “এই উনিশ শতকে তোমার মাধ্যমে আমি বিশ্বকে যে ক্রিয়াযোগ দান করছি, তা সেই একই বিজ্ঞানের পুনরুজ্জীবন যা কয়েক হাজার বছর পূর্বে কৃষ্ণ অর্জুনকে দিয়েছিলেন; এবং যা পরবর্তীকালে পতঞ্জলি ও খ্রিস্টের কাছে পরিচিত হয়েছিল।”

পরমহংস যোগানন্দ লিখেছিলেন, “সাধারণ সমাজের অজ্ঞাতসারে, ১৮৬১-তে বারাণসীর এক প্রত্যন্ত কোণে এক মহান আধ্যাত্মিক নবজাগরণ শুরু হয়েছিল। যেমন ফুলের সুগন্ধ চাপা দেওয়া যায় না, তেমনি লাহিড়ী মহাশয়, একজন আদর্শ গৃহস্থ হিসেবে নীরবে জীবনযাপন করলেও, তাঁর সহজাত মহিমা লুকিয়ে রাখতে পারেননি। ভারতের সকল স্থান থেকে ভক্ত-মধুকররা এই মুক্ত গুরুর দিব্য অমৃত সন্ধানে আসতে শুরু করলেন।”

“পৌরাণিক উপাখ্যানে যেমন গঙ্গা স্বর্গ থেকে মর্ত্যে অবতরণ করেছিলেন, তৃষিত ভক্ত ভগীরথকে দিব্য সুধা প্রদানের জন্য, তেমনই ১৮৬১-তে ক্রিয়াযোগের দিব্য ধারা হিমালয়ের গুপ্ত নিভৃত আশ্রয় থেকে মানুষের ধূলিধূসরিত জনপদে প্রবাহিত হতে শুরু করেছিল।”

এই স্বর্গীয় নদী আজও প্রবাহমান রয়েছে পরমহংস যোগানন্দের প্রচেষ্টায় এবং মহাবতার বাবাজি ও স্বামী শ্রীযুক্তেশ্বরের নির্দেশে তাঁর প্রতিষ্ঠিত সংস্থার মাধ্যমে।পরমহংস যোগানন্দ ব্যক্তিগতভাবে এক লক্ষ শিষ্যকে ক্রিয়াযোগের পবিত্র বিজ্ঞানে দীক্ষিত করেছিলেন, এবং তারপর থেকে আরও হাজার হাজার মানুষ যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া/সেল্ফ-রিয়লাইজেশন ফেলোশিপ (ওয়াইএসএস/এসআরএফ)-এর মাধ্যমে দীক্ষা লাভ করেছেন, যে প্রতিষ্ঠানটি তিনি ক্রিয়াযোগের বাণী প্রচারের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মহাবতার বাবাজি তাঁকে যে মিশন অর্পণ করেছিলেন তা হল ক্রিয়াযোগ অনুশীলনের মাধ্যমে সকল ধর্মের অন্তর্নিহিত এক ঈশ্বরের প্রত্যক্ষ ব্যক্তিগত অনুভূতি লাভে সকলকে সাহায্য করা, এবং এইভাবে বিশ্ব পরিবারকে একত্বের আধ্যাত্মিক বন্ধনে এবং দিব্য আত্মীয়তায় ঐক্যবদ্ধ করা।

১৮৬১-র সেই পুণ্য মুহূর্তটি মানবজাতির মধ্যে আত্মার অসীম সম্ভাবনার দর্শন জাগ্রত করার জন্য এক আধ্যাত্মিক বিপ্লবের সূচনা করেছিল। আজ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঈশ্বরসন্ধানীরা তাঁদের ক্রিয়াযোগের নিষ্ঠাবান অনুশীলনের মাধ্যমে ঈশ্বর-মিলন ও ঈশ্বর-আনন্দের দিব্য অমৃত পান করছেন। বহুকাল পূর্বে বাবাজি যেমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ক্রিয়াযোগ ওয়াইএসএস/এসআরএফ-এর মাধ্যমে সকল দেশে বিস্তৃত হচ্ছে।

যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া/সেল্ফ-রিয়লাইজেশন ফেলোশিপ সন্ন্যাসী পরিক্রমা, ক্রিয়াযোগ দীক্ষা, সমাবর্তন (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র), শারদ সঙ্গম (ভারত), এবং বিশ্বব্যাপী আমাদের বহু কেন্দ্র ও মন্দিরে বিশেষ অনুষ্ঠান ও কার্যক্রমের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠান উদযাপন করেছে। আরও তথ্যের জন্য অনুগ্রহ করে আপনার স্থানীয় কেন্দ্র বা মন্দিরের সাথে যোগাযোগ করুন।

পরমহংস যোগানন্দ তাঁর আত্মজীবনী শেষ করেছিলেন এইসকল আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যদ্বাণীমূলক আশীর্বাদের বাণী দিয়ে: “প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে ক্রিয়াযোগের মঙ্গলময় ভূমিকা সবেমাত্র শুরু হয়েছে। মানবজাতির দুঃখ-কষ্ট দূরীকরণের জন্য আত্মোপলব্ধির একটি নির্দিষ্ট, বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া যে বিদ্যমান রয়েছে, তা সকল মানুষ যেন জানতে পারে!”

অটোবায়োগ্রাফি অফ এ য়োগি সমগ্র বিশ্বে ক্রিয়াযোগকে প্রসারিত করা গ্রন্থটি পড়ুন

Autobiography of a Yogi book cover

এখনই অর্ডার করুন

বিভিন্ন ভাষায় উপলব্ধ

এই শেয়ার করুন