যোগদা সৎসঙ্গ সন্ন্যাসী সম্প্রদায়

সন্ন্যাসীদের একটি সম্প্রদায় যারা ঈশ্বর লাভ এবং শ্রীশ্রী পরমহংস যোগানন্দের আধ্যাত্মিক এবং মানবিক সেবাকার্যের জন্য নিবেদিত।

YSS_Monastics_Ranchi

ভূমিকা

সম্পূর্ণ ত্যাগের পথ তাঁরাই সানন্দে গ্রহণ করেন যাঁরা ঈশ্বর দর্শন করতে চান, এবং ঈশ্বর ছাড়া আর কিছুই চান না। তিনি তাঁদের কাছেই নিজেকে প্রকাশ করেন যাঁরা ত্যাগীর ধর্ম পালন করেন: ‘ঈশ্বরই আমার জীবন। ঈশ্বরই আমার ভালোবাসা। ঈশ্বরই হলেন সেই মন্দির যিনি আমার হৃদয়কে নিরবিচ্ছিন্ন সাধনার জন্য আহ্বান করেন। ঈশ্বরই আমার লক্ষ্য। ঈশ্বরের থেকে প্রাপ্ত শক্তি ছাড়া কোনো কর্তব্যই পালন করা যায় না, তাই আমার সর্বোত্তম কর্তব্য হল তাঁর সন্ধান করা।’

— পরমহংস যোগানন্দ

যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (ওয়াইএসএস)-এর কেন্দ্রে আছে পরমহংস যোগানন্দ প্রতিষ্ঠিত একটি নিবেদিত সন্ন্যাসী সম্প্রদায়।

ওয়াইএসএস-এর সন্ন্যাসীরা বিভিন্ন ভূমিকায় ভারতবর্ষ ও তার প্রতিবেশী দেশগুলিতে সোসাইটির আধ্যাত্মিক এবং মানবিক কাজ করে থাকেন —পরমহংস যোগানন্দজি ও তাঁর সাক্ষাৎ শিষ্যদের রচনা এবং রেকর্ডিং প্রকাশ করা, আধ্যাত্মিক পরামর্শ দেওয়া, সৎসঙ্গ, নিভৃতাবাস ও বক্তৃতা সফর পরিচালনা করা, ভবন, ধ্যান উদ্যান এবং আশ্রমের রক্ষণাবেক্ষণ; ওয়াইএসএস পাঠমালা এবং পুস্তক বন্টনের তত্ত্বাবধান করা; এবং একটি আধ্যাত্মিক ও দাতব্য সংস্থার কাজ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নানারকম প্রশাসনিক, অফিস এবং অন্যান্য দায়িত্ব পালন করেন।

যোগদা সৎসঙ্গের প্রত্যেক সন্ন্যাসীর মূল কর্তব্য হল প্রতিদিন ঈশ্বরের প্রতি ভালোবাসা এবং তাঁকে লাভ করার আকাঙ্খা বাড়িয়ে তোলা —আমিত্ব ভাবের সমস্ত ক্ষুদ্র আকাঙ্ক্ষাকে ঈশ্বরে সমর্পণ করা যাতে ঈশ্বরই তার অস্তিত্বের সর্বগ্রাসী বাস্তব হয়ে ওঠেন, প্রতি মুহূর্তে, প্রতিদিন, যতদিন না আত্মার অন্তিম মুক্তি লাভ হচ্ছে।

Paramahansa Yoganandaji with Daya Mataji

তাঁর প্রথম দিকের সন্ন্যাসধর্মে দীক্ষিত শিষ্যদের মধ্যে অন্যতম শ্রী দয়ামাতার সঙ্গে পরমহংস যোগানন্দজি। ১৯৩১-এ এসআরএফ আশ্রমে আসার কিছুদিন পরেই গুরুদেব তাঁকে বলেছিলেন “তুমি আমার ভবিষ্যতের সঞ্চয়, তুমি যখন এলে আমি জানতাম তোমাকে দেখে আরও অনেক সত্যিকারের ভক্ত এই পথে আকর্ষিত হবে।”

শতাব্দী প্রাচীন এক ঐতিহ্য

যুগ যুগ ধরে মানবাত্মার প্রবলতম আকর্ষণ হল প্রকৃত প্রেমের, বোধের, আনন্দের, সম্পূর্ণতা লাভের আকাঙ্ক্ষাতে সত্যের অন্বেষণ। পৃথিবীর সব মহান ধর্মেই কিছু নির্বাচিত ব্যক্তি থাকেন যারা পারিবারিক জীবন, ভোগ বাসনাকে পরিত্যাগ করে একান্ত চিত্তে ঈশ্বর অনুসন্ধানে নিজেদেরকে সমর্পিত করেন।

শতাব্দী প্রাচীন এই ঐতিহ্যকে অনুসরণ করে যোগদা সৎসঙ্গের সন্ন্যাসীরা ত্যাগের এক চতুর্মার্গের শপথ গ্রহণ করেন: সরলতা, ব্রহ্মচর্য, আজ্ঞানুবর্তিতা এবং আনুগত্য। প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্য উভয় ধর্মমত অনুযায়ী এই ধরণের অঙ্গীকারই হল সন্ন্যাস জীবনের মূল ভিত্তি।

ভারতবর্ষের প্রাচীন স্বামী সম্প্রদায়

পরমহংস যোগানন্দ ও তাঁর গুরুদেব স্বামী শ্রীযুক্তেশ্বর, ভারতবর্ষের প্রাচীন স্বামী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, শত শত বছর আগে আদি শঙ্করাচার্য এর পুনর্বিন্যাস করে যে বর্তমান রূপ দিয়েছেন এবং আজ পর্যন্ত তা পূজনীয় গুরুগণের অবিচ্ছিন্ন ধারার মাধ্যমে চলে এসেছে। স্বামী সম্প্রদায়ের সকল সন্ন্যাসীরাই প্রথম শঙ্করাচার্যের সঙ্গে তাঁদের আধ্যাত্মিক পরম্পরার যোগসূত্র খুঁজে পাবেন। তাঁরা দারিদ্র্য (অনাসক্তি), ব্রহ্মচর্য, সম্প্রদায়ের প্রধান বা আধ্যাত্মিক কর্তৃপক্ষের প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার গ্রহণ করেন। স্বামী সম্প্রদায়ের দশটি শাখা রয়েছে যার মধ্যে একটি হল গিরি (পর্বত),যার অন্তর্ভুক্ত হলেন স্বামী শ্রীযুক্তেশ্বর এবং পরমহংস যোগানন্দ।

ওয়াইএসএস সন্ন্যাসী যারা সন্ন্যাসের অন্তিম শপথ গ্রহণ করেন তাঁরা এই স্বামী সম্প্রদায়ের সদস্য হন।

১৯৩০-এর প্রথমদিকে দয়ামাতা (১৯১৪–২০১০) এবং অন্য নিবেদিত প্রাণ ভক্ত যারা সংসারজীবন ত্যাগ করে শুধুমাত্র ঈশ্বরের জন্য জীবন সমর্পণ করতে চেয়েছিলেন, তাঁদের আগমনের পরেই পরমহংস যোগানন্দ এসআরএফ/ওয়াইএসএস-এর প্রথম সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯৫২-তে পরমহংসজি দেহ রাখার পর এসআরএফ এবং ওয়াইএসএস এর সন্ন্যাসী সম্প্রদায়, তাঁর উত্তরাধিকারী রূপে যে শিষ্যরা সোসাইটির অধ্যক্ষ এবং আধ্যাত্মিক প্রধান হয়েছেন তাঁদের নেতৃত্বে এখনও বর্ধিত হয়ে চলেছে।

শ্রী দয়ামাতা তাঁর দীর্ঘমেয়াদী কর্মজীবনে ভারতবর্ষ, ইউএসএ এবং ইউরোপের আশ্রমে সংসারত্যাগীদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উন্নতির কাজে সক্রিয় আগ্রহ দেখিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁকে এই ধরণের কাজে বহু দশক ধরে যিনি সাহায্য করেছিলেন তিনি হলেন শ্রী মৃণালিনী মাতা (১৯৩১-২০১৭), যিনি এসআরএফ এর উপপ্রধান রূপে এবং শ্রী দয়ামাতার পর তাঁর উত্তরাধিকারীরূপে ২০১১-তে এসআরএফ/ওয়াইএসএস-এর অধ্যক্ষ পদের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০১৭-তে শ্রী স্বামী চিদানন্দ গিরি অধ্যক্ষের পদে নামাঙ্কিত হন এবং ওয়াইএসএস/এসআরএফ- এর সন্ন্যাসী সম্প্রদায়কে পথপ্রদর্শন করার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শত শত সন্ন্যাসী যাঁরা ঈশ্বর লাভ এবং মানুষের সেবার জন্যে জীবন সমর্পণ করার আহ্বান অনুভব করেছেন তাঁদের দ্বারা এই সম্প্রদায় আজও সমৃদ্ধ হয়ে চলেছে।

আশ্রমের দৈনন্দিন জীবন

একজন সন্ন্যাসীরূপে, আমার জীবন ঈশ্বরের প্রতি অকপট সেবা এবং তাঁর বার্তাসহ মানুষের হৃদয়ে আধ্যাত্মিক জাগরণের জন্যে নিবেদিত… যে সাংগঠনিক কার্য ঈশ্বর এবং আমার গুরু ও পরমগুরুগণ আমার মাধ্যমে শুরু করেছেন, তা যারা ত্যাগের উচ্চতম আদর্শ এবং ঈশ্বরের প্রতি ভালোবাসায় নিজেদের জীবন সমর্পণ করেছেন তাদের মাধ্যমে বাহিত হচ্ছে।

— পরমহংস যোগানন্দ

বিভিন্ন বৈচিত্র্যের মিলন

সম্পূর্ণ হৃদয় দিয়ে ঈশ্বরকে ভালোবাসাই হল সর্বকালের সম্মানিত ত্যাগের আদর্শ; এবং সঙ্গে সহসাথীদেরও ভালোবাসা, শুধুমাত্র বিমূর্ত ধারণায় নয় দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি আলাপচারিতায় — প্রত্যেককে ঈশ্বরের প্রতিচ্ছবি রূপে দেখা এবং প্রত্যেকের নিজ প্রয়োজনকে সকলের প্রয়োজন মনে করা। পরমহংসজি বলেছেন, “একদিন আমরা অপরিচিত ছিলাম কিন্তু যখন আমরা ঈশ্বরকে ভালোবাসলাম, আমরা একে অপরের ভ্রাতা ও ভগিনী হলাম।”

ওয়াইএসএস সন্ন্যাসীরা বিভিন্ন ধরণের পারিপার্শ্বিক অবস্থা থেকে এসেছেন — বৈচিত্রময় সংস্কৃতি, বিভিন্ন ধর্মীয় মতে প্রতিপালিত, শিক্ষাগত বিকাশ এবং পেশাগত অভিজ্ঞতা। কিন্তু সব সন্ন্যাসীদের মধ্যে যা সর্বজনীন তা হল শুধুমাত্র ঈশ্বরলাভের জন্য জীবন ধারণ করার প্রবল আকাঙ্ক্ষা।

আত্ম-শৃঙ্খলা, আত্মসমীক্ষা, একনিষ্ঠ ধ্যান এবং ভালোবাসার সেবায় আমিত্বের সম্পূর্ণ বিসর্জন দিয়ে একজন সন্ন্যাসী আত্মার গভীরতর আনন্দের উপলব্ধি এবং সেই সর্বশ্রেষ্ঠ প্রেম যা একমাত্র ঈশ্বরই দিতে পারেন তার আকাঙ্খা করেন।

YSS Monastics Daily Life in the Ashram

আশ্রমের দৈনন্দিন জীবন

YSS Monastics Daily life in Ashram

‘‘আশ্রমের জীবন খুবই সরল এবং সততায় পূর্ণ এবং একই সঙ্গে ভীষণ ফলপ্রসূ, আমার অন্তরাত্মার জন্য এক প্রকৃত ও স্থায়ী সুখের অনুভূতি, পরিপূর্ণতা এবং এক সুগভীর নিরাপত্তা ও পুষ্টির চেতনা।’’

— নবছর আশ্রমবাসী এক সন্ন্যাসী

সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীর দৈনন্দিন জীবন নির্দিষ্ট আশ্রম এবং যে কার্যক্ষেত্রের সঙ্গে তিনি যুক্ত তার ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়, কিন্তু পরমহংসজি সম্যক আধ্যাত্মিক জীবনযাপনের যে মূল তত্ত্বগুলির ওপর জোর দিয়েছিলেন তা সর্বদা এর অন্তর্ভুক্ত: ধ্যান এবং প্রার্থনা, সেবা, আধ্যাত্মিক পাঠ এবং আত্মসমীক্ষা, শরীরচর্চা এবং বিনোদন এবং নির্জনতা ও নীরবতার জন্য সময়।

গুরুর প্রচার কার্যে সেবাদান

ওয়াইএসএস সন্ন্যাসীরা সোসাইটির আধ্যাত্মিক এবং মানবিক কাজে বিভিন্ন ভূমিকায় সেবাদান করেন:

  • পরমহংসজি এবং তাঁর সাক্ষাৎ শিষ্যদের রচনা ও রেকর্ডিং প্রকাশ করা (সব ধরণের মাধ্যমে)
  • আধ্যাত্মিক পরামর্শ প্রদান করা
  • সৎসঙ্গ, নিভৃতাবাস, বক্তৃতা সফর পরিচালনা করা
  • ভারতবর্ষ ও উপমহাদেশে ২০০টিরও অধিক কেন্দ্র এবং মন্ডলীকে পথনির্দেশ দেওয়া
  • ওয়াইএসএস-এর ভবন, ধ্যান উদ্যান এবং আশ্রমের রক্ষণাবেক্ষণ
  • ওয়াইএসএস পাঠমালা, পুস্তক, ইবুক এবং রেকর্ডিং এর বন্টনের তদারকি করা
  • একটি আধ্যাত্মিক এবং সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রশাসনিক, অফিস এবং অন্যান্য কার্য সঞ্চালন করা
A YSS sannyasi providing Spiritual counsel to devotees

যদিও এই বিভিন্ন ধরণের কাজে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, পথ প্রদর্শনের নীতি হল সর্বদা সেই বিশেষ নির্দেশের পবিত্রতা ও মূল ভাব অক্ষুণ্ণ রাখা, যা পৃথিবীতে আনয়নের জন্য পরমহংস যোগানন্দ ওয়াইএসএস/এসআরএফ গুরুপরম্পরা দ্বারা নিয়োজিত হয়েছিলেন। প্রত্যেক ওয়াইএসএস সন্ন্যাসীর সর্বোত্তম উদ্দেশ্য হল ঈশ্বরের সঙ্গে সমন্বয়ে প্রতিদিন আরও উন্নতিসাধন করা, যার মাধ্যমে সকলকে সহৃদয়ে এবং সহানুভূতি দ্বারা সেবা করা সম্ভব হয়।

‘‘যতদিন যাচ্ছে আমি আরও বেশি করে অনুভব করছি আমার গুরুর আশ্রমে আন্তরিক নিবেদিতপ্রাণ ভক্তদের দ্বারা পরিবৃত থেকে এভাবে বসবাস করা, সেবা করা এবং স্বাধীনভাবে ঈশ্বর আকাঙ্ক্ষা করতে পারা কত বড়ো আশীর্বাদ।’’

— সাত বছর ধরে আশ্রমবাসী এক সন্ন্যাসী

সন্ন্যাসজীবনের চারটি পর্যায়

আমি আছি তোমারই চরণতলে
আমার জীবন, আমার অঙ্গ, আমার চিন্তা এবং বাক্য।
সকলই তোমার; সকলই তোমার।

— পরমহংস যোগানন্দ

ওয়াইএসএস আশ্রমে সন্ন্যাস জীবনের চারটি পর্যায় আছে, যা ত্যাগের জীবন এবং সন্ন্যাসব্রতের প্রতি ক্রমবর্ধমান অঙ্গীকারের প্রতিনিধিত্ব করে। এই পর্যায়গুলির কোনো নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য নেই। প্রতিটি সন্ন্যাসীর আধ্যাত্মিক উন্নতি এবং সেই ত্যাগব্রতী এই জীবনের প্রতি নিজেকে সম্পূর্ণ নিবেদন করতে কতটা প্রস্তুত, তা সবসময়ই ব্যক্তি বিশেষের ওপর বিবেচিত হয়।

আপনি কি দিব্য আহ্বান শুনেছেন?

সন্ন্যাস বৃত্তি

তোমার মন আমাতে নিবিষ্ট করো; আমার ভক্ত হও; আমাতে সর্বস্ব সমর্পণ করো, আমার কাছে নত হও, তুমি আমার প্রিয়, তাই আমি তোমার কাছে সত্য প্রতিজ্ঞা করছি: তুমি আমাকেই পাবে! সব ধর্ম (কর্তব্য) পরিত্যাগ করে, শুধু আমাকেই স্মরণ করো!

— পরমহংস যোগানন্দ

আপনার মন কি ঈশ্বর এবং গুরুর প্রতি নিবেদিত এক জীবনের প্রতি এবং তাঁদের দিব্য উদ্দেশ্যে সেবা প্রদান করতে আকৃষ্ট বোধ করে?

আপনি কি একত্রে মহোত্তম লক্ষ্য পূরণের জন্য প্রচেষ্টাকারী ঈশ্বর অন্বেষী ভক্তসম্প্রদায়ের অংশ হবার আকুল আকাঙ্খা অনুভব করেছেন?

তাহলে, অন্তরের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আপনি সন্ন্যাস জীবনকে বিবেচনা করতে পারেন।

সাধারণ যোগ্যতা (প্রত্যেক আবেদনকারীর পরিস্থিতি এবং যোগ্যতা পৃথকভাবে বিবেচিত হয়):

  • অবিবাহিত
  • শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী
  • পরিবার ও অন্যান্য বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত
  • যোগদা সৎসঙ্গ পাঠমালার শিক্ষার্থী
  • বয়স ১৮ থেকে ৪০ এর মধ্যে
  • ইংরেজি ভাষা ভালোভাবে বুঝতে ও বলতে সক্ষম

ওয়াইএসএস আশ্রমে বসবাস একটি আধ্যাত্মিকতা সহায়ক সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে পরমহংস যোগানন্দজির মানবকল্যাণমূলক কাজে সহায়তার মাধ্যমে ঈশ্বরের সঙ্গে আপনার ব্যক্তিগত সম্পর্ক গভীরতর করে তোলার এক আশীর্বাদধন্য সুযোগ প্রদান করে।

আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার আমন্ত্রণ

পরমহংস যোগানন্দের আশ্রমে আত্মোন্নতি, ধ্যান এবং মানব সেবায় সমর্পিত জীবনযাপন করার সুযোগ পাওয়ার বিষয়ে আরও জানতে আপনাকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

সন্ন্যাস: সন্ন্যাস আদর্শের প্রতি নিষ্ঠা ও সমর্পণের এক জীবন

২০১৯-এ ওয়াইএসএস রাঁচি আশ্রমের স্মৃতি মন্দিরে স্বামী পরম্পরায় নব দীক্ষিতদের সাথে ওয়াইএসএস/এসআরএফ প্রেসিডেন্ট শ্রীশ্রী স্বামী চিদানন্দ গিরি
২০১৯-এ ওয়াইএসএস রাঁচি আশ্রমের স্মৃতি মন্দিরে স্বামী সম্প্রদায়ে নতুন দীক্ষিতদের সঙ্গে ওয়াইএসএস/এসআরএফ অধ্যক্ষ শ্রীশ্রী স্বামী চিদানন্দ গিরি

একশ বছরেরও অধিক পূর্বে ১৯১৫-র জুলাই মাসে, পরমহংস যোগানন্দ ভারতবর্ষের শ্রীরামপুরে, তাঁর গুরু স্বামী শ্রীযুক্তেশ্বরের থেকে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণের পর ভারতবর্ষের সুপ্রাচীন স্বামী সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন। এই ঘটনা বাইশ বছর বয়সী মুকুন্দ লাল ঘোষ যিনি সেই সময় থেকে স্বামী যোগানন্দ গিরি নামে পরিচিত হয়েছিলেন, শুধুমাত্র তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়নি — বিংশ শতাব্দী ও তার পর পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বের আধ্যাত্মিক জাগরণের ক্ষেত্রে তাঁর প্রভাবের সুচনা করেছিল, এর কারণ শুধুমাত্র তাঁর দীর্ঘস্থায়ী উত্তরাধিকারের অংশ হিসেবে যে সন্ন্যাস পরম্পরা তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা নয়।

পরমহংস যোগানন্দ যে প্রাচীন স্বামী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত, তা বর্তমানে ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত সন্ন্যাসীদের নিয়ে গঠিত যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া সন্ন্যাসী সম্প্রদায় রূপে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এই সন্ন্যাসী সম্প্রদায় ওয়াইএসএস-এর সমৃদ্ধিকে বজায় রেখেছেন এবং ভারতীয় উপমহাদেশে যোগের বিস্তীর্ণ প্রচারে সাহায্য করছেন।

আমন্ত্রণ

১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে অবিবাহিত পুরুষ, শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, পারিবারিক বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত এবং যাদের ঈশ্বরানুসন্ধানের জন্য এবং সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ের একজন ত্যাগব্রতী রূপে তাঁর সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করার আন্তরিক আকাঙ্ক্ষা রয়েছে, আরও জানার জন্যে তাদের যোগদা সৎসঙ্গ শাখা আশ্রম, রাঁচি তে যোগাযোগ করতে আমন্ত্রণ জানান হচ্ছে।