ভূমিকা
শুধুমাত্র পুঁথিগত শিক্ষা মানুষকে খুশি করতে পারে না। এ হল “জীবনশৈলী” শিক্ষা — কিভাবে একটি সমন্বয়পূর্ণ, নৈতিক জীবন, দৃঢ়তর ইচ্ছাশক্তি এবং আধ্যাত্মিক উপলব্ধি গড়ে তোলা যায় — যা সুখ নিয়ে আসবে।
— শ্রীশ্রী পরমহংস যোগানন্দ
পরমহংস যোগানন্দ তরুণদের কল্যাণের জন্য গভীরভাবে অনুভব করেছিলেন এবং তাদের সর্বাঙ্গীন উন্নতিতে সারা জীবন আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (ওয়াইএসএস) সম্যক জীবনযাপন শৈলী কর্মসূচি প্রদান করে যা তরুণদের কিভাবে ধ্যান ও নীতি পরায়ণতায় সম্যক জীবনযাপন করতে হয় তা শেখায়।
যোগী কথামৃত তে যোগানন্দজি রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধৃত করে বলেছেন: “প্রকৃত শিক্ষা বাহ্যিক উৎস থেকে জোর করে ঢুকিয়ে দেওয়া যায় না বরং তা অর্ন্তজ্ঞানের অসীম ভান্ডারকে বাইরে আনতে সাহায্য করে।”
এই দর্শনের ওপর ভিত্তি করে ওয়াইএসএস যুব কর্মসূচি প্রশিক্ষণের একটি উপভোগ্য পরিবেশ তৈরি করে যেখানে তরুণরা জীবনে নতুন দক্ষতা অর্জনের সাথে সাথে স্বাধীনভাবে নিজেদের প্রকাশ করতে পারে, তাদের সহজাত দক্ষতা ও আত্মিক গুণগুলি সামনে নিয়ে আসতে পারে।

দু ধরণের পদ্ধতিতে দুই বয়েসের গোষ্ঠীর কাছে পৌঁছোন
ওয়াইএসএস যুব পরিষেবা বিভাগ দুটি বয়েসের গোষ্ঠীর উদ্দেশ্যে যুব প্রচারের সমন্বয় সাধন করে:
- শিশুদের সৎসঙ্গ (বয়স ৮-১২)
- কিশোর কিশোরীদের কর্মসূচি (বয়স ১৩-১৭), এবং
এই দুই গোষ্ঠীর কর্মসূচি দু ধরণের পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়—সরাসরি এবং অনলাইন দুভাবেই।
বর্তমানে সরাসরি চালু কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে প্রতি রবিবার ওয়াইএসএস আশ্রম ও কেন্দ্রে পরিচালিত শিশুদের সৎসঙ্গ এবং মে-জুন মাসে নয়ডা ও চেন্নাই আশ্রমে আয়োজিত গ্রীষ্মকালীন শিবির।
আমাদের অনলাইন উপস্থাপনাগুলির মধ্যে রয়েছে শিশুদের সৎসঙ্গ এবং কিশোর কিশোরীদের কর্মসূচি, যে দুটি শীঘ্রই শুরু করা হবে। এছাড়াও একটি এক সপ্তাহব্যাপী গ্রীষ্মকালীন অনলাইন যুব কর্মসূচি (এসআরএফের সহযোগিতায়) প্রতি বছর পরিচালিত হয়। এটি শিশু এবং কিশোর কিশোরীদের একটি দৃঢ় আধ্যাত্মিক ও নৈতিক ভিত্তি প্রদান করে যার ওপর সারা জীবন গড়ে তুলতে হবে। ২০২৩-এ এসআরএফ [ওয়াইএসএস] এর অনলাইন গ্রীষ্মকালীন যুব কর্মসূচিতে ২১টি দেশ থেকে শয়ে শয়ে শিশু অংশগ্রহণ করেছিল। অন্যান্য কর্মসূচি উন্নয়নাধীন।
উপকারিতা
বছরের পর বছর ধরে শিশু এবং কিশোর কিশোরীরা আমাদের লিখে জানিয়েছে যে কিভাবে তারা এই যুব কর্মসূচি থেকে উপকৃত হয়েছে। কিছু উপকারিতা হল:
- ঈশ্বরকে পাওয়ার জন্য যোগ ধ্যানের প্রক্রিয়া শেখা
- নতুন, সারাজীবনের জন্য আধ্যাত্মিক বন্ধু খুঁজে পাওয়া
- আরও ভালো করে একাগ্র হওয়ার ক্ষমতা
- সাহস এবং প্রশান্তির সঙ্গে ভয় ও উদ্বেগের সম্মুখীন হওয়ার ক্ষমতা
- শক্তিসঞ্চার ব্যায়াম, আসন, এবং প্রাণায়ামের মাধ্যমে আরও ভালো স্বাস্থ্য
- পরীক্ষায় আরও ভালো করার সামর্থ্য
প্রশংসাপত্র
বি. দ্র., একজন ১৭ বছর বয়েসী লিখেছেন: “আমি যখন ১০ বছরের ছিলাম, আমি যুব কর্মসূচির সময় মনসংযোগের হং-স প্রক্রিয়া শিখেছিলাম। আমার ১৫ বছর বয়েস না হওয়া পর্যন্ত আমি সত্যিই ধ্যান নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করিনি। যখনই আমরা পরীক্ষার ফলাফল পেতাম, আমি সেগুলি বিশ্লেষণ করতাম আর লক্ষ্য করতাম যে এমন অনেক ভুল আমি করেছি যেগুলি সহজেই এড়ানো যেত যদি আমি আরও একটু বেশি একাগ্র হতাম। বাৎসরিক চূড়ান্ত পরীক্ষা এগিয়ে আসছিল। আমার পরীক্ষার নম্বর ৮৮% এ দোদুল্যমান ছিল আর আমি ক্যালকুলাস ক্লাসে একটি নিখুঁত স্কোর চাইছিলাম।
“আমার ফাইনাল পরীক্ষার আগের রাতে আমি হং-স এর শান্তি অনুভব না করা পর্যন্ত গভীরভাবে ধ্যান করেছি। পরের দিন যখন আমি পরীক্ষার হলে গেলাম, আমি শান্ত এবং নিরুদ্বেগ ছিলাম। আমরা যখন ফলাফল পেলাম, আমি আনন্দে চিৎকার করে উঠলাম। আমিই ক্লাসে একমাত্র ছিলাম যে ১০০% নম্বর পেয়েছিলাম। ওই সময় আমার মনে হয়েছিল যে, সবাই ধারণাগুলি এবং সূত্রগুলি জানে। চাপের সময় যেমন কোনও পরীক্ষার সময় সেগুলি মনে করা কঠিন। ধ্যান আমাকে শান্ত থাকতে এবং মনঃসংযোগ করতে সাহায্য করেছে আর স্কুলে এটা সত্যিই আমাকে সাহায্য করেছিল।”
শিশুদের সৎসঙ্গ
যুবদের জন্য সঠিক শিক্ষার আদর্শ সবসময়ের জন্যই আমার হৃদয়ের খুব কাছাকাছি ছিল।…নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ, যার মূল্যায়ন ছাড়া কোনও মানুষ সুখের ঘনিষ্ঠ হতে পারে না, প্রচলিত পাঠক্রমে তা তখনও অনুপস্থিত ছিল।
— শ্রীশ্রী পরমহংস যোগানন্দ


এই মহান গুরু ১৯১৭-তে বাংলার একটি গ্রামীণ এলাকায় সাতজন শিশুকে নিয়ে একটি ছোট্ট স্কুল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাঁর কাজ শুরু করেন। পরবর্তীকালে তাঁর নির্দেশনায় যুক্তরাষ্ট্রের এসআরএফ মন্দির ও কেন্দ্রগুলিতে প্রথম সানডে স্কুল গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে ওয়াইএসএসের যুব পরিষেবা বিভাগ থেকে বিভিন্ন রকমের যুব কর্মসূচি প্রদান করা হয়।
ওয়াইএসএস/এসআরএফের বিশ্বব্যাপী আধ্যাত্মিক পরিবারের ক্রমাগত বিকাশের সঙ্গে ওয়াইএসএস কেন্দ্র ও মন্ডলী প্রদত্ত শিশুদের সৎসঙ্গের প্রতিও আগ্রহ বাড়ছে।
শিশুদের সাপ্তাহিক সৎসঙ্গের উদ্দেশ্য হল একটি আনন্দপূর্ণ শিক্ষার পরিবেশে অন্যান্য আধ্যাত্মিক শিশুদের সান্নিধ্যে বাচ্চাদের নিরন্তর অনুপ্রেরণা প্রদান করা যা শিশু হতে শিশুর শেখাকে সম্ভবপর করে তোলে। শিশুদের ঈশ্বরের সাথে একটি প্রীতিপূর্ণ ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলতে এবং কিভাবে সঠিক আচরণ একটি সুখী, ভারসাম্যপূর্ণ জীবনের দিকে নিয়ে যায় তা দেখাতে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য ক্লাসগুলি সাজানো হয়েছে। ভজন ও ধ্যানের সময়কাল অতন্দ্র মনোযোগ জাগিয়ে তোলে এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করে আর গুরুদেবের লেখা গল্পগুলি তাদের আধ্যাত্মিক ও মানসিক বুদ্ধিমত্তাকে উন্নত করে, যখন দলবদ্ধ কার্যকলাপ দলগত মনোভাব, সহযোগিতা এবং সমন্বয়পূর্ণ যোগাযোগ দক্ষতাকে উৎসাহিত করে।
সৃজনশীলতা, অধ্যাবসায়, উদ্যোগ এবং ধৈর্য্যের মতো উত্তম চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি শেখানোর জন্য ক্রীড়া ও কারুশিল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়। শিশুদের শক্তিসঞ্চার ব্যায়াম ও ধ্যানের ক্ষেত্রে বয়সোপযোগী নির্দেশ দেওয়া হয়। এই সবকিছুর উদ্দেশ্য হল একটি ক্লাসরুমের মতো পরিবেশ এড়ানো যেখানে প্রচুর তথ্য মুখস্থ করার একটা চাপ থাকে এবং ওয়াইএসএস শিক্ষাগুলিকে একটি স্বচ্ছন্দ ও আকর্ষক উপায়ে উপস্থাপন করা — শিশুদের সৎসঙ্গকে একটি আনন্দময় অভিজ্ঞতায় পরিণত করা যা শিশুরা বারবার চাইবে।
অভিভাবক ও শিক্ষকদের ভূমিকা
পরমহংস যোগানন্দজি বলেন: “আত্মকেন্দ্রিকতার সীমানা ছাড়িয়ে ভালোবাসার বিস্তার ঘটা শুরু হয় পরিবার থেকে—মা বাবার ভূমিকায় নিজের বাইরে বেরিয়ে আসার প্রাথমিক স্বতঃস্ফূর্ত সূত্রপাত।”
এটি দেখায় যে সন্তানদের সার্বিক বিকাশে মা বাবার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাদের উদীয়মান আধ্যাত্মিক জীবন, যদি উৎসাহিত করা হয়, একটি সফল ও সুখী জীবনের ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে।
শিক্ষক শিক্ষিকাদের ভূমিকা প্রসঙ্গে শ্রী দয়া মাতা বলেন, “আমাদের সানডে স্কুলের [শিশুদের সৎসঙ্গ] শিক্ষক শিক্ষিকাদের একটি বৃহৎ দায়িত্ব রয়েছে, কারণ তারা বিশ্বকে পরিবর্তন করতে সাহায্য করতে পারেন। আজকের শিশুদের তাদের জীবনে ঈশ্বরকে সর্বাগ্রে রাখতে শেখানোর মাধ্যমে, যোগদা শিশুদের সৎসঙ্গের শিক্ষক শিক্ষিকারা আগামী দিনের জন্য একটি নতুন ও উন্নত পৃথিবী তৈরি করতে সাহায্য করবেন।”
গুরুদেবের শিষ্যদের পরবর্তী প্রজন্ম গড়ে তোলার জন্য মা বাবা এবং শিক্ষক শিক্ষিকার পাশাপাশি প্রশাসনিক কর্মী স্বেচ্ছাসেবকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ওয়াইএসএস যুব পরিষেবার জন্য প্রয়োজন। আপনারা যারা স্থানীয় কেন্দ্র অথবা মন্ডলীতে শিশুদের সৎসঙ্গ শুরু করতে চান এবং যারা বর্তমানে চালু শিশুদের কর্মসূচিতে শিক্ষক শিক্ষিকা ও কর্মচারীর পরিষেবা দিতে ইচ্ছুক তারা [email protected] তে যোগাযোগ করুন।
গ্রীষ্মকালীন শিবির
নয়ডাতে মেয়েদের গ্রীষ্মকালীন শিবির
পরমহংস যোগানন্দের সরল, পরিমিত জীবনযাত্রার আদর্শের অনুপ্রেরণার সাথে, মে মাসে নয়ডার যোগদা সৎসঙ্গ শাখা আশ্রমে মেয়েদের একটি বার্ষিক শিবির পরিচালিত হয়। এই শিবিরের লক্ষ্য হল একটি সামগ্রিক শিক্ষার পরিবেশ প্রদান করে নবীন অংশগ্রহণকারীদের শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক বিকাশকে উৎসাহিত করে একটি আধ্যাত্মিক সাহচর্যের অনুভূতি জাগিয়ে তোলা।


শিবিরের বৈশিষ্ট্য
- দৈনিক সমবেত ধ্যান
- ভজন ক্লাস
- ব্যবহারিক জ্ঞান যেমন প্রাথমিক চিকিৎসা, জরুরি ব্যবস্থাপনা এবং আগুনহীন রান্না
- শারীরিক ক্রিয়াকলাপ যেমন তায়কণ্ডু ক্লাস এবং ক্রীড়ার সময়
- কারুশিল্প প্রকল্প
- সময় পরিচালনা
- ইমেইল শিষ্টাচার এবং অনলাইন নিরাপত্তা


সম্যক জীবনযাপন শিক্ষা
একাগ্রতা, চারিত্রিক বিকাশ, ইচ্ছাশক্তি, অন্তর্দর্শন এবং সাফল্যের সূত্রের মতো বিষয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষক শিক্ষিকা দ্বারা সম্যক জীবনযাপন শিক্ষার একটি ক্রম যা ব্যক্তিগত বিকাশকে সহজতর করে তোলে। শিবিরের সময়সূচি দিনে তিনবার ধ্যানের সময়, তার সাথে শক্তিসঞ্চার ব্যায়াম ও যোগাসনের অভ্যাসের সাথে জড়িত।
অডিও-ভিডিও এবং সরাসরি উপস্থাপনা
ধারাবাহিক সান্ধ্যকালীন অনুষ্ঠান অংশগ্রহণকারীদের আধ্যাত্মিক আকুতিকে জাগিয়ে তুলতে এবং তাদের আধ্যাত্মিক জ্ঞান এবং উপলব্ধিকে গভীরতর করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে গুরুদেবের ওপর ভিডিও প্রদর্শনী, ভারতের সাধুদের ওপর উপস্থাপনা এবং ভজন কীর্তন পর্ব।
এই পাঁচ দিনের শিবির সাধারণত একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয়।
সঠিক জীবনযাপনশৈলী শিখুন। আপনার আনন্দ থাকলে আপনার সবকিছুই রয়েছে।
— শ্রীশ্রী পরমহংস যোগানন্দ
নয়ডা আশ্রমে ছেলেদের গ্রীষ্মকালীন শিবির
ছেলেদের গ্রীষ্মকালীন শিবির আনন্দপূর্ণ, নৈতিক জীবনযাপনের আদর্শে মনোযোগ দেয়। এটি প্রতি বছর জুন মাসে নয়ডার যোগদা সৎসঙ্গ শাখা আশ্রমে আয়োজিত একটি পাঁচ দিনের শিবির। এই কর্মসূচি ছেলেদের শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে সর্বাঙ্গীন উন্নতিতে সহায়তা করে।


অভিযোজন
প্রথম দিনে একজন ওয়াইএসএস সন্ন্যাসী পরিচালিত অভিযোজনের ক্লাস দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়। একটি সুরক্ষিত ও আনন্দপূর্ণ পরিবেশে অংশগ্রহণকারীদের শিবির থেকে সর্বাধিক সুবিধা পেতে সহায়তা করতে আচরণবিধির একটি তালিকা—“করা উচিত” এবং “করা উচিত নয়”—উল্লেখ করা হয়েছে।
কর্মশালা এবং সম্যক জীবনযাপন ক্লাস
তরুণ অংশগ্রহণকারীদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের সুবিধার্থে শিবিরের সময়সূচিতে একাধিক কর্মশালার সাথে সাথে খেলাধুলাও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কারুশিল্প, বৈদিক গণিত, ইমেইল শিষ্টাচার, সময় পরিচালন, সঙ্গীতের প্রাথমিক বিষয়, জনসমক্ষে বক্তৃতা এবং পরিবেশ সচেতনতার মতো নানা ধরণের বিষয়ের ওপর কর্মশালা আয়োজিত হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা এবং জরুরী ব্যবস্থাপনার ওপরেও ক্লাস হয়। খেলাধূলার সময় ছেলেরা ফুটবল, হ্যান্ডবল, ডগ এন্ড দ্য বোন এবং কবাডির মতো অনেক খেলায় অংশ নেয়। ‘সাফল্যের নিয়ম’ এবং ‘স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধির’ মতো নিজস্ব উন্নতির বিষয়ও বিশ্লেষণ করা হয়।


আধ্যাত্মিক নির্দেশ
শিবিরের কার্যক্রমের মূলে সেইসব রয়েছে যা ছেলেদের আধ্যাত্মিক উন্নতিতে সহায়তা করে। যোগাসনের পরেই হয় শক্তিসঞ্চার ব্যায়াম এবং ধ্যানের সমবেত অভ্যাস যা সন্ন্যাসী এবং ভক্ত স্বেচ্ছাসেবক উভয়ের দ্বারাই পরিচালিত হয়। সন্ন্যাসীদের দ্বারা ওয়াইএসএস শিক্ষা এবং ভারতীয় আধ্যাত্মিক সাহিত্য থেকে গল্প বলার বিশেষ পর্ব রয়েছে। ছেলেদের ঈশ্বর এবং গুরুগণের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত করার জন্য বরিষ্ঠ সন্ন্যাসীদের দ্বারা বিশেষ ক্লাসের আয়োজন করা হয়।
সমাপ্তি অনুষ্ঠানটি একটি সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীর সাথে যৌথভাবে হয়। অংশগ্রহণকারীরা তাদের শিবির চলাকালীন বিশেষ অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেয়। অভিভাবকরা একটি স্লাইডশো উপস্থাপনার মাধ্যমে শিবিরের কার্যক্রমের ঝলক দেখার এবং সন্ন্যাসীর একটি অনুপ্রেরণামূলক বক্তৃতা শোনার সুযোগ পান।
চেন্নাই আশ্রমে ছেলে ও মেয়েদের জন্য গ্রীষ্মকালীন শিবির
মে জুন মাসে শ্রীপেরামবুদুরের ওয়াইএসএস চেন্নাই আশ্রমেও এই ধরণের সামার ক্যাম্প আয়োজিত হয়েছিল।
কিশোর কিশোরীদের কর্মসূচি
“যখন আত্মারা ঈশ্বর কে নিয়ে একসঙ্গে উন্নতি করতে চায়, তখনই দিব্য সখ্যতার সূচনা হয়। হৃদয়ের ভাব যদি আধ্যাত্মিকতায় পূর্ণ এবং খাঁটি বন্ধুদের সঙ্গ পেয়ে নিখুঁত হয় এবং সেই প্রেমের বৃত্ত ততদূর বিস্তৃত হয় যতক্ষণ না সব কিছু তার অন্তর্ভুক্ত হয়, তখনই সব বন্ধুর বন্ধুকে পাওয়া যায়।”
— শ্রী শ্রী পরমহংস যোগানন্দ
ওয়াইএসএস এর কিশোর কর্মসূচি ১৩থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলে মেয়েদের জন্য তৈরি। এর উদ্দেশ্য হল পরমহংস যোগানন্দের সম্যক জীবনযাপন শিক্ষা —যা হল বৈজ্ঞানিক ধ্যান এবং গঠনমূলক কার্যক্রমের মেলবন্ধন, তার অভ্যাসের দ্বারা কিশোরদের নিজেদের জীবনের আধ্যাত্মিক ভিত গড়ে তুলতে সাহায্য করা।
তেরো থেকে ঊনিশ হল শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্কে পরিণত হয়ে ওঠার মধ্যেকার এক গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই পর্যায়ে তরুণ প্রাপ্তবয়স্করা বড় ধরণের মানসিক এবং শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায় । একই সঙ্গে তাদের কেরিয়ার এবং জীবনের পথ বেছে নেওয়ার চাপ সামলাতে হয়। এইরকম গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আধ্যাত্মিক বন্ধু এবং শিক্ষকদের একটি বিশ্বস্ত সঙ্গীদল থেকে এই বয়সীরা অত্যন্ত উপকৃত হয়।
যোগদা কিশোর কার্যক্রম থেকে তরুণ তরুণীরা একদম এইধরনেরই সহায়ক গোষ্ঠী পেয়ে থাকে। অন্তর্দৃষ্টিমূলক আলোচনা , আত্মসচেতনতা বিষয়ক ওয়ার্কশপ, এবং সপ্তাহান্তের অনুষ্ঠানের সঙ্গে একত্রে অনলাইন ও ব্যক্তিগতভাবে আয়োজিত ব্যক্তিত্ব গঠন বিষয়ের ওপর সেমিনার, গ্রীষ্মকালীন শিবির এবং আধ্যাত্মিক নিভৃতাবাস ইত্যাদির মাধ্যমে ওয়াইএসএস অল্পবয়সীদের সহায়তা করতে আগ্রহী।
সাম্প্রতিক উদ্যোগ
২০২৪ এর গ্রীষ্মকালে , ওয়াইএসএস একটি প্রাথমিক অনলাইন টিন পাইলট কার্যক্রম পরিচালনা করে—এটি ছিল কিশোরদের উপযোগী সাপ্তাহিক সৎসঙ্গ অনুষ্ঠান যা ২০২৪ এর জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত দশ সপ্তাহ ধরে চলেছিল। আমরা আশা করি এই অনলাইন কার্যক্রমটি আরও বাড়াতে পারব এবং আগামী বছর সারা ভারতের কিশোরদের অংশগ্রহণের জন্য আরম্ভ করতে পারব। ২০২৪ শের শরৎকালে ওয়াইএসএস রাঁচি আশ্রমে প্রতি রবিবার ব্যক্তিগতভাবে একটি নতুন কিশোর সৎসঙ্গ শুরু করা হয়েছিল যার ফল অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক ছিল। এখানে আরও পড়ুন। আমরা কিশোরেদের জন্য অন্যান্য স্থানেও এই ধরণের অনুষ্ঠান শুরু করার পরিকল্পনা করছি।
পরিষেবার সুযোগ এবং ওয়াইএসএস যুব পরিষেবা বিভাগ সম্পর্কে সাধারণ প্রশ্নের জন্য অনুগ্রহ করে [email protected] তে যোগাযোগ করুন।
অনলাইন এসআরএফ কার্যক্রম
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত সেল্ফ- রিয়লাইজেশন ফেলোশিপের যুব পরিষেবা বিভাগ কয়েক দশক ধরে এসআরএফ মন্দির এবং কেন্দ্রতে “সম্যক জীবনযাপন” (সানডে স্কুল) ক্লাস পরিচালনা করে আসছে। বিগত কয়েক বছর ধরে এসআরএফ যুব পরিষেবা বিশ্বব্যাপী শিশুদের জন্য অনলাইন ক্লাস পরিচালনা করা শুরু করেছে। ভারতের শিশুদেরকে তাদের সুবিধা মতো নির্দিষ্ট সময়ে এই ক্লাসের জন্য নিবন্ধন করতে স্বাগত জানানো হয়।
বর্তমানে শিশু এবং কিশোর কিশোরীদের জন্য উপলব্ধ সমস্ত উপস্থাপনা দেখতে এবং সেগুলির জন্য নিবন্ধন করতে অনুগ্রহ করে SRF Youth Services events page এ যান।