যোগদা সৎসঙ্গ শাখা আশ্রম — চেন্নাই
…এটি এক আধ্যাত্মিক শান্তির মরুদ্যান প্রমাণিত হতে পারে, যেখানে ভক্তগণ নিজেদের সতেজ ও পুনরুজ্জীবিত করতে সময়মতো যেতে পারবে।
— শ্রীশ্রী দয়ামাতা
২০১০-এ চেন্নাই নিভৃতাবাস উৎসর্গ উপলক্ষ্যে প্রাক্তন সঙ্ঘমাতা এবং ওয়াইএসএস/এসআরএফ এর তৃতীয় অধ্যক্ষ শ্রীশ্রী দয়ামাতার এই দিব্য আশীর্বাণী যোগদা সৎসঙ্গ শাখা আশ্রম, চেন্নাই-এর বিবর্তনকে যেন সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছিল।.
আশ্রমটি প্রীতিপূর্ণ শ্রমদানের এক চূড়ান্ত পরিণতি — ঈশ্বর ও গুরুর প্রতি ক্লান্তিহীন সেবার মনোবৃত্তির এক মধুর নিদর্শন। শহুরে-কর্মব্যস্ততায় বিধ্বস্ত পুনরুজ্জীবন প্রয়াসী ভক্তদের কাছে ধীরে ধীরে এক আধ্যাত্মিক মরুদ্যানে পরিণত হয়েছে সেই নির্জন বনভূমির এক ক্ষুদ্র ধ্যান কুটীরে যার সূত্রপাত।
চেন্নাই থেকে গাড়িতে এক ঘণ্টা দূরত্বে শ্রীপেরাম্বুদুর-এর কাছে মান্নুর গ্রামে অবস্থিত এই আশ্রম, ১৯৭৩-এ ওয়াইএসএস-এর দীর্ঘদিনের এক ভক্ত, শ্রী গাইতুনডে একখণ্ড জমি কিনেছিলেন, এরপর ১৯৯৮ তে ওয়াইএসএসকে তিনি জমিটি দান করেন। ২০০৬-এর ৩১শে ডিসেম্বর সেখানে প্রধান ভবনের ভিত্তি স্থাপন করেন স্বামী শান্তানন্দ। ২০১০-এর ২৫শে জুলাই স্বামী শুদ্ধানন্দ সেখানে নিভৃতাবাসের উদ্বোধন করে সর্বপ্রথম সন্ন্যাসী পরিচালিত অনুষ্ঠানের সূচনা করেন যেখানে ১০০০ এরও অধিক ভক্ত যোগ দিয়েছিলেন।
চেন্নাইতে যোগদা সৎসঙ্গ শাখা আশ্রমের পবিত্র স্থানে ভক্তজন তাদের সাধনা ও অধ্যয়নকে পুনরুজ্জীবিত করার সঙ্গে সঙ্গে পরমহংস যোগানন্দের রাজযোগ শিক্ষাকেও জানতে সক্ষম হবেন। এ ছাড়াও রবিবাসরীয় সৎসঙ্গে যোগদান, দৈনিক ধ্যানে অংশগ্রহণ, ওয়াইএসএস সন্ন্যাসীগণের নিকট আধ্যাত্মিক পরামর্শ এবং পরমহংস যোগানন্দের দেওয়া ধ্যানের প্রক্রিয়া সঠিকভাবে আয়ত্বীকরণে সন্ন্যাসীগণের নির্দেশনা লাভ করতে আশ্রম সদাই ভক্তদের স্বাগত জানায়।
ওয়াইএসএস চেন্নাই নিভৃতাবাস-এর ওয়াইএসএস আশ্রমে উন্নীতকরণ
খুবই আনন্দের সঙ্গে আপনাদের জানাই, এক সাধনা সঙ্গমের সমাপ্তিপর্বে সৎসঙ্গ চলাকালীন সরাসরি সম্প্রচারে যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া/সেল্ফ রিয়লাইজেশন ফেলোশিপ-এর অধ্যক্ষ এবং আধ্যাত্মিক প্রধান, শ্রীশ্রী স্বামী চিদানন্দ গিরি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন — ওয়াইএসএস চেন্নাই নিভৃতাবাসকে ওয়াইএসএস আশ্রমে মনোনীত করা হল এবং অচিরেই কয়েক বছরের মধ্যে একে পূর্ণাঙ্গ আশ্রমে গড়ে তোলা হবে।

ওয়াইএসএস/এসআরএফ-এর অধ্যক্ষ এবং আধ্যাত্মিক প্রধান, শ্রীশ্রী স্বামী চিদানন্দ গিরি ওয়াইএসএস চেন্নাই নিভৃতাবাসকে ওয়াইএসএস আশ্রমে উন্নীতকরণের ঘোষণা করেন।

ধ্যান মন্দির এবং ধ্যান প্রাঙ্গন




ধ্যান মন্দির
আশ্রম চত্বরে ধ্যান মন্দিরটি যেন এক স্মৃতিসৌধ রূপে বিরাজমান, যেখানে রয়েছে ওয়াইএসএস গুরুগণের পূজাবেদি। হলটিতে প্রায় ৬৫জন মানুষের বসবার ব্যবস্থা করা আছে। প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যা ধ্যান ছাড়াও এখানে বিশেষ বিশেষ দিনে স্মারক ধ্যানও করা হয়।
এটি আবার বিভিন্ন কার্যসূচির কেন্দ্রস্থল; যেমন, সাধনা সঙ্গমের সময় এখানে ক্লাস ও সৎসঙ্গ পরিচালনা, অন্য সময় শিশুদের ক্যাম্প ও পরিচালিত নিভৃতাবাসের ব্যবস্থা করা হয়।
ধ্যান প্রাঙ্গন
চেন্নাই আশ্রমে এই ধ্যান কুটীরটি প্রথম নির্মিত হয়েছিল। অনাবিল মান্নুর হ্রদের আকর্ষণকে ছাড়িয়ে এই সাদাসিধে ধ্যান কুটীর হয়ে উঠেছে ধ্যানের জন্য এক পবিত্র স্থান।
আশ্রম প্রাঙ্গণে এমন কিছু বিশেষ জায়গা আছে, যেখানে ভক্তগণ প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে সহজেই ধ্যানের গভীরে প্রবেশ করতে পারে। যেমন, উদ্যান-বেদি, গাজিবো, পদ্ম দিঘি, এক অতি উঁচু প্রশস্ত ধ্যান মিনার যেখান থেকে সরোবর দৃশ্যমান।
আশ্রম প্রাঙ্গণটি উন্নতমানের বিভিন্ন প্রজাতির নারকেল ও আম গাছ, বিভিন্ন ধরণের ফুলের গাছ আর সবজি বাগানের আবাসস্থল। একাধিক জায়গায় আরামে বসার জন্য বেঞ্চ পাতা আছে, এই পরিমণ্ডল ভক্তকে শরীর, মন ও আত্মা শিথিল করে প্রকৃতির মধ্যে ঐশী সংযোগে প্রবৃত্ত করে।






আশ্রমে অন্তর্বর্তীকালীন সুবিধার ক্রমোন্নয়ন

যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া/সেল্ফ-রিয়লাইজেশন ফেলোশিপ-এর অধ্যক্ষ এবং আধ্যাত্মিক প্রধান, স্বামী চিদানন্দজি ২০২৪-এ ফেব্রুয়ারীর চেন্নাই রিট্রিট-এ ওয়াইএসএস ভক্তদের সেবার জন্য দৈনন্দিন ধ্যান, আধ্যাত্মিক পরামর্শ, সৎসঙ্গ পরিচালনা, সাধনা সঙ্গম, নিভৃতাবাস এবং স্মৃতিস্মারক অনুষ্ঠানে ওয়াইএসএস সন্ন্যাসীগণের আশ্রমে স্থায়ী উপস্থিতি অনুমোদন করেছিলেন। তখন থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদান করতে ভক্তদের মধ্যে আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে আর আশা করা যাচ্ছে, এই চাহিদা ভবিষ্যতে আরও বাড়তে থাকবে, আরও অনেক ভক্ত আধ্যাত্মিক পুনরুজ্জীবন ও নির্দেশনার খোঁজে আসবে।
মুখ্যত নিভৃতাবাসের জন্য পরিকল্পিত বিদ্যমান সুবিধাগুলি এখনকার ক্রমবর্ধমান চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত। সেজন্য আশ্রমের সম্প্রসারিত ভূমিকার সমর্থনে বাসস্থান, রান্নাঘর, ভোজন এলাকা, প্রশাসন এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধার উল্লেখযোগ্য উন্নয়নের প্রয়োজন।
সাপ্তাহিক কার্যক্রম
সমবেত ধ্যান
আশ্রম সর্বসাধারণের জন্যে নিয়মিত ধ্যান ও সৎসঙ্গের আয়োজন করে। এই সময় নীরব ধ্যান, ভজন এবং অনুপ্রেরণাদায়ী পাঠ করা হয়।
- রবিবার
- সকাল ১০:৩০ – দুপুর ১২ টা
- রবিবারের সৎসঙ্গ (সংক্ষিপ্ত ধ্যান সহ)
- বিকেল ৪:৩০ – সন্ধ্যা ৭:৩০
- সান্ধ্য ধ্যান
- বৃহস্পতিবার
- সকাল ৭:০০ – ৮:০০ টা
- প্রাতঃকালীন ধ্যান
- সন্ধ্যা ৬:০০ – রাত ৯:০০ টা
- সান্ধ্য ধ্যান
- অন্যান্য দিন
- সকাল ৭:০০ – ৮:০০ টা
- প্রাতঃকালীন ধ্যান
- সন্ধ্যা ৬:০০ – ৭:৩০ টা
- সান্ধ্য ধ্যান
শিশুদের সৎসঙ্গ
প্রতি রবিবার শিশুদের জন্য সাপ্তাহিক সৎসঙ্গ পরিচালনা করা হয়। এখানে ৫ থেকে ১২ বছরের ছোটো ছেলেমেয়েরা নানা ধরণের কাজ যেমন গল্প বলা, নির্দেশিত স্বল্পকালীন ধ্যান এবং বিভিন্ন রকম ওয়াইএসএস-এর শিক্ষা পদ্ধতি দ্বারা স্বতঃ প্রণোদিত হয়ে কাজ করতে শেখে। বিশদে জানুন
- রবিবার
- সকাল ১০:৩০ – দুপুর ১২:০০ টা
ওয়াইএসএস সাধনা সঙ্গম

চারদিন ব্যাপী কর্মসূচীর মাধ্যমে যোগদা সৎসঙ্গ শিক্ষানুসরণকারী শিক্ষার্থীদের এক অসাধারণ সুযোগ দেওয়া হয়। ওয়াইএসএস সন্ন্যাসী দ্বারা শেখানো ধ্যান প্রক্রিয়ার অভ্যাস, সমবেত ধ্যান, কীর্তন সমাবেশ এবং উদ্দীপক আলোচনার মাধ্যমে তারা পরমহংস যোগানন্দের শিক্ষাতে নিজেদেরকে গভীরভাবে নিমজ্জিত করতে পারে।
জানুয়ারি – ডিসেম্বর, ২০২৪ • নানাবিধ কর্মসূচি • পাঁচটি জায়গা
সাম্প্রতিক কার্যাবলীর ঘোষণা সংক্রান্ত খবরাখবর জানতে ওয়াইএসএস ই-নিউজ সাইন-আপ করুন
আগামি বিশিষ্ট ঘটনাবলি এবং দীর্ঘকালীন ধ্যান

- আগস্ট 16, শনিবার
- সকাল 6:30 - সকাল 8:00
- সমবেত ধ্যান

- আগস্ট 24, রবিবার
- সকাল 10:00 - সন্ধ্যা 6:00
- সমবেত ধ্যান

- সেপ্টেম্বর 26, শুক্রবার
- সকাল 6:30 - সকাল 8:00
- সমবেত ধ্যান
আপনার সফরের পরিকল্পনা করুন
সমবেত ধ্যানে যোগদান করতে বা আশ্রম উদ্যানের প্রশান্তি উপভোগ করতে আমরা আপনাকে স্বাগত জানাই। আপনি আশ্রম সফরে আগ্রহী হলে সময় নির্ধারণের জন্য দয়া করে আমাদের অভ্যর্থনা ডেস্কে যোগাযোগ করুন।
বি: দ্র: সকল দর্শনার্থীদের জন্য আশ্রম প্রাঙ্গণ প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪:৩০টে পর্যন্ত খোলা থাকে।
ওয়াইএসএস ও এসআরএফ পাঠমালার সদস্যগণ আশ্রমে পাঁচদিন পর্যন্ত থাকতে পারবেন। শক্তিসঞ্চারণ ও পুনরুজ্জীবিতকরণে আমরা ভক্তদের ব্যক্তিগত বা পরিচালিত নিভৃতাবাসে যোগদান করতে উৎসাহ দিই। এই নিভৃতাবাসে থাকাকালীন আপনারা ওয়াইএসএস সন্ন্যাসী দ্বারা পরিচালিত সমবেত ধ্যানে দুবেলা অংশগ্রহণ করতে পারেন, যোগদা সৎসঙ্গ পাঠক্রমের অধ্যয়ন ও অভ্যাসের ব্যাপারে আধ্যাত্মিক পরামর্শ ও নির্দেশনা পেতে পারেন।
