Jesus Christ photo as on  Altar of YSS/SRF.

পরমহংস যোগানন্দের প্রচারের একটি মূলগত লক্ষ্য ছিল “ভগবান কৃষ্ণের শেখানো আদি যোগ এবং জিশু খ্রিস্টের শেখানো আদি খ্রিস্ট ধর্মের সম্পূর্ণ সামঞ্জস্য ও প্রাথমিক একত্ব উন্মোচিত করা; এবং দেখানো যে সত্যের এই যথাযথ নীতি সমস্ত প্রকৃত ধর্মের বৈজ্ঞানিক ভিত্তি।”

সর্বসাধারনের সামনে বিশ্বাস, প্রেম ও ক্ষমার সরল তত্ত্বজ্ঞান জিশু উপস্থাপন করেছিলেন। প্রায়শই তিনি উপমা দিয়ে ভাবপূর্ণ শাশ্বত নীতিবাক্য বলতেন। যদিও তাঁর ঘনিষ্ঠ শিষ্যদের তিনি গূঢ় সত্য ও অতিপ্রাচীন যোগ দর্শনের সুগভীর অধিবিদ্যা শিক্ষা দিতেন।

জিশুকে তাঁর শিষ্যরা প্রশ্ন করেছিলেন, “আপনি উপমা দিয়ে কথা বলেন কেন?” উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন, “স্বর্গরাজ্যের রহস্য জানার অধিকার তোমাদের দেওয়া হয়েছে তবে তাদের নয়…তারা দেখেও দেখে না, শুনেও শোনে না, এমনকি তারা বোঝেও না: তাই তাদের উপমায় বলি” (ম্যাথিউ ১৩:১০,১১,১৩)।

জিশুর আদি শিক্ষার পূর্ণ উপলব্ধি — যোগ ধ্যানের রহস্যময় প্রক্রিয়া তিনি তাঁর শিষ্যদের দান করেছিলেন সেই সত্য সমেত — গসপেলস-এর সুগভীর দ্য সেকেন্ড কামিং অফ ক্রাইস্ট: দ্য রেজ়রেক্শন অফ দ্য ক্রাইস্ট উইদিন ইউ-এ পরমহংস যোগানন্দ প্রকাশ করেছেন। এখানে ভূমিকায় যোগানন্দ লিখেছেন:

“জিশু খ্রিস্ট আজও সমানভাবে জীবন্ত ও ক্রিয়াশীল। চৈতন্যরূপে বা কখনও রক্ত-মাংসের শরীর ধারণ করে সাধারণের অলক্ষ্যে বিশ্বের পুনরুদ্ধারের জন্য ক্রিয়াশীল। বিশ্বজনীন প্রেমপূর্ণতায় শুধুমাত্র স্বর্গের আনন্দময় চৈতন্য উপভোগেই জিশু সন্তুষ্ট নন। তিনি মানবজাতির জন্য গভীরভাবে উদ্বিগ্ন আর ঈশ্বরের অসীম রাজ্যে প্রবেশের জন্য তাঁর অনুগামীদের দৈবি অধিকার দিতে চান। তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত অনেক গির্জা ও পীঠস্থান প্রায়শই সমৃদ্ধ ও সক্রিয় হলেও তিনি অসন্তুষ্ট, তাঁর উচ্চারিত সেই ঐক্যতান কোথায় — পরমাত্মার সাথে যথার্থ সংযোগ? জিশু চান প্রথমত ও সর্বাগ্রে মানুষের হৃদয়ে মন্দির স্থাপিত হোক তারপর হোক বাহ্যিক উপাসনালয়ের প্রতিষ্ঠা। অসংখ্য বিশাল বিশাল প্রাসাদের ধর্মসভায় খ্রিস্ট ধর্মের শিক্ষা দেওয়া হলেও আদতে সামান্য কিছু মানুষ গভীর প্রার্থনা ও ধ্যানের মাধ্যমে খ্রিস্ট-র সংস্পর্শে আছে।

“কৃষ্ণ এবং খ্রিস্টের ঈশ্বর-উপলব্ধির আদি শিক্ষার পুনঃপ্রচলন করে ভক্তের হৃদয়মন্দিরে পরমপিতার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্যই মহাবতার বাবাজি আমায় পাশ্চাত্যে পাঠিয়েছেন…

“বাবাজি সর্বদা খ্রিস্টের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে রয়েছেন; সর্বদাই তাঁরা যুক্তভাবে মুক্তির স্পন্দন প্রেরণ করছেন আর বর্তমান যুগে মুক্তির জন্য আধ্যাত্মিক প্রক্রিয়ারও ব্যবস্থা করছেন।”

এই শেয়ার করুন