“ক্ষমা করলে মনের শান্তি লাভ হয়” – শ্রী দয়ামাতা

৭ এপ্রিল, ২০২৩

শ্রীশ্রী দয়ামাতার ‘ফাইন্ডিং দ্য জয় উইদিন ইউ’ শীর্ষক বই থেকে নেওয়া কিছু অংশ নিম্নে দেওয়া হল। শ্রী দয়ামাতা ১৯৫৫ থেকে ২০১০-এ তাঁর দেহাবসান পর্যন্ত যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া/সেল্ফ-রিয়লাইজেশন ফেলোশিপ-এর সঙ্ঘমাতা ও অধ্যক্ষ পদে কার্যরত ছিলেন।

পরমহংস যোগানন্দ বলতেন যে ঠিক যেমন একটি গোলাপ ফুল পিষ্ট হলেও সুগন্ধ ছড়ায়, ঈশ্বরের ভক্তও নির্দয়তা দ্বারা পিষ্ট হলেও ভালোবাসার মিষ্টি সুরভিই নিঃসৃত করতে থাকে।

দিব্য প্রেমের সুস্নিগ্ধ স্পন্দনসমৃদ্ধ ক্ষমাভাব, ক্রোধ, অপরাধবোধ ও ঘৃণাজনিত ক্ষয়কারক অশান্তি প্রশমিত করে। এই ত্রুটিপূর্ণ জগতে, যেখানে পরার্থপরতা অনিবার্যভাবে বিরোধের সম্মুখীন হয়, ক্ষমাশীলতা ঈশ্বর-সচেতনতারই এক অভিব্যক্তি।

আমাদের সাথে কেউ দুর্ব্যবহার করলে, যদি আমরা দোষীকে দোষারোপ না করে, অবাধে তাকে ক্ষমা করে আমাদের চেতনারূপী ‘স্লেট’-কে মুছে পরিষ্কার করি, এর ফলস্বরূপ, আমরা মনের এক পবিত্র প্রশান্তি অর্জন করি।

মাঝে-মাঝে ক্ষমা করা ও মনে না রাখা — সম্পূর্ণ ছেড়ে দেওয়া এত কঠিন হয় কেন? মানুষের অহং নিজের পক্ষে সমর্থন দাবি করে ও সে প্রতিহিংসা বা প্রতিশোধের মাধ্যমে তা পেতে চায়; অন্যকে দোষারোপ করে সে নিজেকে উন্নতমানের বোধ করে। কিন্তু তা আমাদের শান্তি দেয় না।

তবে আমরা যদি আমাদের প্রকৃত সত্তা, অর্থাৎ আমাদের স্বয়ংসম্পূর্ণ আত্মার কথা শুনে দোষীর অপরাধ-ঋণ মকুব করে দিই ও ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি — “হে প্রভু, ওকে আশীর্বাদ করুন”, আমরা অনেক বেশি সুখী হবো। আমরা কি চাই না যে ঈশ্বর ও অন্য সকলে আমাদের দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করে দিক? “ক্ষমা করিও, তাহলে তোমাদিগকেও ক্ষমা করা হইবে” — এই হল দিব্য নিয়ম।

হিন্দু ধর্মশাস্ত্রে লেখা আছে: “সকল আঘাতেই ক্ষমা করা উচিত….ক্ষমা বিশ্ব- ব্রহ্মাণ্ডের ধারক-বাহক । ক্ষমা হচ্ছে বলশালীর বল, ক্ষমা হচ্ছে ত্যাগ, ক্ষমা হচ্ছে মনের শান্তি। আত্মজ্ঞানী মানুষদের গুণ হচ্ছে ক্ষমা ও নম্রতা, যা চিরন্তন সদগুণের দৃষ্টান্ত।”

এই আদর্শ মেনে জীবনযাপন করুন, সকলের প্রতি দয়া ও নিরাময়কারী ভালোবাসা ব্যক্ত করুন। তাহলে আপনি অনুভব করবেন যে ঈশ্বরের সর্বগ্রাহী প্রেম আপনার হৃদয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এই শেয়ার করুন