২১ শে জুন-এ প্রথম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের সংযোগে, পরমহংস যোগানন্দকে সম্মানিত করা হয় একটি এক্সপ্রেস ট্রেনের নব নামকরণের মাধ্যমে যা ভারতের রাঁচি — যে শহরে তিনি ১৯১৮-তে “ব্রহ্মচর্য” বিদ্যালয় ও আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন — এবং কলকাতার হাওড়া স্টেশনকে যুক্ত করে। দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া-র ২৫শে জুন অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে ট্রেনটিকে এখন থেকে “ক্রিয়াযোগ এক্সপ্রেস” বলা হবে বলে জানানো হয়েছে।


ঝাড়খণ্ডে — রাঁচি শহর যে রাজ্যে অবস্থিত — দুজন উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক যোগ আনীত ব্যবহারিক ও গভীর পরিবর্তন এবং বিশ্বব্যাপী যোগের প্রয়োগে অগ্রগামী ভূমিকার জন্য পরমহংস যোগানন্দের ভূমিকার প্রশংসা করে পৃথক পৃথকভাবে যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (ওয়াইএসএস)-কে পত্র পাঠান।
ওয়াইএসএস রাঁচি আশ্রমকে পাঠানো ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী, মাননীয় রঘুবর দাসের পত্র নিম্নরূপ:

“ভারত সরকারের রেলমন্ত্রক হাটিয়া-হাওড়া-হাটিয়া এক্সপ্রেসের নাম পরিবর্তন করে ‘ক্রিয়াযোগ এক্সপ্রেস’ রেখেছে জেনে খুবই আনন্দিত হয়েছি। পরমহংস যোগানন্দজির সাধনক্ষেত্র রাঁচির পরিচয়ে একটা নতুন পালক সংযোজিত হল। এইজন্যে আমাদের সম্মানীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমাদের রেলমন্ত্রী শ্রী সুরেশ প্রভুকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। আধ্যাত্মিক উন্নতি, আত্ম-নিয়ন্ত্রণ ও শরীর-মনের ত্তজস্বিতার জন্য যোগের গুরুত্ব সর্বজনবিদিত। আমাদের জন্য এটা খুব গর্বের বিষয় যে, পরমহংস যোগানন্দজি রাঁচি থেকে শুরু করে তাঁর ক্রিয়াযোগ শিক্ষা ভারতে ও সমগ্র বিশ্বে বহুল প্রচার করেন আর পাশ্চাত্যের দেশে যোগের মর্যাদাকে জাগ্রত করেন।
“পরমহংস যোগানন্দজির নিঃস্বার্থ উদ্যোগের কারণেই সারা বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ ক্রিয়াযোগ অনুগামী পরমপিতার সাথে একত্বের আনন্দ উপলব্ধি করছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগের ফলে সারা বিশ্ব আগ্রহের সাথে ২১শে জুন আন্তর্জাতিক যোগদিবস পালন করছে। তাঁর উদ্যোগ অবশ্যই যোগের প্রসারকে গতি দেবে।
“ভারতে ও বিশ্বের অন্যত্র যোগশিক্ষা প্রসারের জন্য রাঁচির যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া-কে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই এবং এই উপলক্ষ্যে তাঁদের ত্রৈমাসিক পত্রিকাকে সফল প্রকাশনার জন্য শুভকামনা জানাই।”
ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল মহামান্য দ্রৌপদী মুর্মু হতে প্রাপ্ত অন্য একটি প্রশংসাপত্র:

“যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া-র উদ্যোগে যোগের বার্তার ব্যাপক প্রসারের সহায়তায় ভারত সরকারের রেলমন্ত্রক দ্বারা হাওড়া-হাটিয়া-হাওড়া এক্সপ্রেসের নাম ‘ক্রিয়াযোগ এক্সপ্রেস’ হয়েছে জেনে আমি আনন্দিত হয়েছি।
“যোগ, শুধুমাত্র সুস্থ জীবনযাপনের শক্তিশালী মাধ্যমই নয়, শারীরিক রোগও প্রতিকার করে।মানুষের শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশে যোগ এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যোগ শরীরকে তেজোদীপ্ত করে আর মনে শান্তি আনে। ব্যাপক ভাবে যোগকে অবলম্বন করলে সুস্থ মানুষ, সুস্থ সমাজ আর এক সুস্থ জাতির স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে পারবে। এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে আমাদের দেশের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক যোগদিবস পরিপূর্ণ উৎসাহের সঙ্গে সারা পৃথিবীতে পালিত হয়েছে এবং এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত শিবিরগুলিতে সক্রিয়ভাবে জনসাধারণ অংশগ্রহণ করেছে।
“আমি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে যোগের বার্তা প্রসারে পরমহংস যোগানন্দজি প্রতিষ্ঠিত সংস্থা যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া-র কাজের খুবই সমাদর করি।”
ট্রেনটির নতুন নাম প্রতীকীভাবে যথাযথ হয়েছে। রাঁচিতে স্কুল ও আশ্রম প্রতিষ্ঠার বছরগুলিতে পরমহংসজি প্রায়ই রাঁচি আর কলকাতার মধ্যে ট্রেনে যাতায়াত করতেন। সম্ভবত, পাশ্চাত্যে তথা বিশ্বের সাথে ক্রিয়াযোগের পরিচয় করানোর জন্য তাঁর নির্ধারিত সময় এসে গেছে এমন দিব্যদৃষ্টির পরে ১৯২০-র জুলাই মাসে যখন রাঁচি থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন সেই যাত্রাই সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল।