ওয়াইএসএস শতবর্ষ স্মরণে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ডাকটিকিট প্রকাশ

৭ মার্চ, ২০১৭

Postage stamp commemorating the 100th anniversary of Yogoda Satsanga Society.

ভারতের প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় শ্রীনরেন্দ্র মোদী ৭মার্চ, ২০১৭-তে নিউদিল্লিতে অনুষ্ঠিত একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে শ্রীশ্রী পরমহংস যোগানন্দের সমগ্র জীবনের কর্মের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এক বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটির ১০০-তম জয়ন্তী স্মরণে ভারত সরকার একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করেন। ৭ই মার্চ, ১৯৫২-তে পরমহংসজির মহাসমাধি জয়ন্তীকে বিশেষ সম্মান জানানোর জন্য দিনটি বেছে নেওয়া হয়েছিল।

মার্চ, ১৯১৭-তে ভারতের ডিহিকায় পরমহংস যোগানন্দের ছোটো একটা আশ্রম ও বালক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার সূচনা হয়। আজ সারা ভারত, নেপাল ও শ্রীলংকায় ওয়াইএসএস-এর ২০০টির অধিক ধ্যানকেন্দ্র ও মন্ডলী আছে।

(বি.দ্র.: ভিডিও পরিবেশনায় ১৫:৫৬ থেকে ১৮:১৮ পর্যন্ত প্রেরণ ত্রুটির জন্য দুঃখিত।)

গভর্ণমেন্টস কনভেনশন সেন্টার ফর অফিসিয়াল ইভেন্টস-এর বিজ্ঞান ভবনের প্রশস্ত প্রধান প্রেক্ষাগৃহে প্রায় ১,৫০০ সরকারি কর্মকর্তা ও ওয়াইএসএস সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীদের সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নতুন ডাকটিকিট প্রকাশ করেন। তারপর তিনি ভারতের মহান যোগী ও গুরুদের মধ্যে অন্যতম — নিজের জীবন ও কর্মধারার মাধ্যমে বিশ্বের সামনে ভারতের আধ্যাত্মিকতার অসাধারণ মূল্যের প্রদর্শক পরমহংসজিকে চরিত্রায়িত করেন — এবং আধুনিক বিশ্বে ভারতের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের প্রচারে প্রতিষ্ঠাতার কর্মশক্তি ও উত্তরাধিকার সার্থকভাবে বজায় রাখার জন্য ওয়াইএসএস-এর প্রশংসা করে এক উদ্দীপক ভাষণ দেন।”

ইংরেজিতে সম্পূর্ণ বয়ান | হিন্দিতে

প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের উদ্ধৃতাংশ

Prime Minister of India, Narendra Modi speaking about Paramahansa Yogananda and Kriya Yoga. প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা আজ ৭ই মার্চ এক বিশেষ অনুষ্ঠানের স্মরণে সমবেত হয়েছি এবং আমি শ্রীশ্রী [মৃণালিনী] মাতাজিকে প্রণাম জানাই, তিনি লস অ্যাঞ্জেলস থেকে এই অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন বলে আমাকে জানানো হয়েছে….

“নিজের অন্তরে ডুব দিয়ে অন্তর্মুখী যাত্রায় প্রবৃত্ত হতে অনেক বেশি সাহস ও প্রত্যয় প্রয়োজন হয়। যোগের কিছু পদ্ধতির জন্য শরীরের শক্তি ও নমনীয়তা প্রয়োজন হয়, সেখানে ক্রিয়াযোগ এমনিই [এক মার্গ], যাতে অভয় প্রদায়ী অন্তঃস্থিত অঙ্গীকার প্রয়োজন হয় আর এটা আপনাকে জীবনরহস্যের মর্মোদ্ধারের যাত্রায় নিয়ে যায়….

“[পরমহংস যোগানন্দ] প্রায়ই বলতেন, ‘আমি হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে মৃত্যুবরণ করতে চাই না। আমি নিজের পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে ভারতমাতার কথা বলতে বলতে মৃত্যুবরণ করতে চাই।’এর অর্থ, তিনি ভারতের মাটি ছেড়ে পাশ্চাত্যে ভারতের সুপ্রাচীন শিক্ষার বার্তা ছড়িয়ে দিতে এলেও, মুহূর্তের জন্যেও তাঁর প্রিয় মাতৃভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন বা পৃথক হয়ে আছেন বলে অনুভব করেননি….

“অনমনীয় মতবাদ দূর করে, তিনি আধ্যাত্মিকতাকে এতটাই সহজগম্য ও বোধগম্য করে দিয়েছেন, যে কারণে শুরুর থেকে এই শত বর্ষেও তাঁর কর্মধারা আধ্যাত্মিক উপলব্ধির বিশ্বজোড়া আন্দোলনের এক চিরন্তন উৎস হয়ে উঠেছে….[তিনি] তাঁর প্রতিষ্ঠানকে এমনভাবে সুসমন্বিত করেছেন যা আজও সেই প্রচারকে বহমান রাখতে পেরেছে। আর আজ যতই আমরা তাঁর সাধনার ধারায় অংশগ্রহণ করছি, প্রাপ্ত হচ্ছি, তাঁর আত্মিক সুখ, তাঁর কর্মধারা ততই এগিয়ে চলছে। আমার মনে হয় এটাই তাঁর সবথেকে বড়ো অবদান।”

শ্রী মৃণালিনীমাতার একটি বার্তা

লস অ্যাঞ্জেলস আন্তর্জাতিক সদর দফতর থেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে আসা ওয়াইএসএস/এসআরএফ পরিচালন সমিতির সদস্য স্বামী বিশ্বানন্দ প্রধানমন্ত্রীর সাথে মঞ্চে উপবিষ্ট, সাথে ওয়াইএসএস-এর সাধারণ সম্পাদক স্বামী স্মরণানন্দ ও ওয়াইএসএস-এর পরিচালন সমিতির অন্যান্য সদস্যগণ। স্বামী স্মরণানন্দ উদ্বোধনী ভাষণ দেন, তারপর লস অ্যাঞ্জেলস থেকে সরাসরি সম্প্রচারে উপস্থিত থাকা ওয়াইএসএস/এসআরএফ অধ্যক্ষ এবং সঙ্ঘমাতা শ্রী মৃণালিনী মাতার প্রেরণাদায়ী বার্তা পাঠ করেন স্বামী বিশ্বানন্দ।

শ্রী মৃণালিনী মাতা তাঁর বার্তায় বলেছেন:“ভারতের দীর্ঘ ইতিহাস জুড়ে—তার ঋষিদের প্রত্যক্ষ উপলব্ধি মানব সমাজকে দান করা সযত্ন লালিত অধ্যাত্ম সত্যের সক্রিয় প্রকাশ—আজও তার সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ ও শক্তি….ভারত সরকার আজকের দিনটি বেছে নিয়েছেন এমন এক আদর্শ দিব্য পুরুষের জীবনব্যাপী কর্মের সম্মানে যিনি শুধু ভারতের জন্যেই নয়, বরং এই কঠিন সময়ে আধ্যাত্মিক জ্যোতির আশায় তার দিকে তাকিয়ে থাকা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য আশা ও প্রেরণার অন্তর্নিহিত উৎস।” (তাঁর সম্পূর্ণ বার্তাটি নিচে দেওয়া হল।)

ওয়াইএসএস-এর শতবার্ষিকী উৎসব উদযাপনের আরও প্রতিবেদন

খুব শীঘ্রই আমরা এই মাসে, ১৯-২৩মার্চ, ওয়াইএসএস-এর রাঁচি আশ্রমে অনুষ্ঠিত ওয়াইএসএস-এর শতবার্ষিকী উৎসবের আরও কিছু তথ্য নিয়ে আসব। সারা বছর ধরে শতবার্ষিকী উৎসব উদযাপনের ও ৭ই মার্চ ডাকটিকিট প্রকাশের এক ছবি পঞ্জিকা দেখার জন্য আপনাকে ওয়াইএসএস ওয়েবসাইট পরিদর্শনে আমন্ত্রণ জানাই।

অনুষ্ঠানের আরও চিত্র

Narendra Modi lights the Diya.
অনুষ্ঠানে র উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও ওয়াইএসএস/এসআরএফ পরিচালন সমিতির সন্ন্যাসীরা আনুষ্ঠানিক প্রদীপ প্রজ্বলন করছেন।
Smarananda speaks on Yogananda's teachings.
স্বামী স্মরণানন্দ পরমহংসজির উদাহরণ দিয়ে ঈশ্বরের প্রাজ্ঞতার ব্যাখ্যা এবং অটোবায়োগ্রাফি অফ এ য়োগি-র অসংখ্য অনুবাদ কি ভাবে পৃথিবীর ৯৫% জনসংখ্যার জন্য পাঠযোগ্য করে তুলেছে সেই ব্যাপারে বলেন।
Sri Narendra Modi displays the commemorative stamp.
ওয়াইএসএস-এর শততম বার্ষিকী স্মরণে প্রধানমন্ত্রী মোদী বিজ্ঞান ভবনে দর্শক-শ্রোতার করতালির মাঝে সরকার আয়োজিত বিশেষ ক্রোড়পত্র সহযোগে স্মারক ডাকটিকিট প্রদর্শন করেন।
Prime Minister Modi delivers his address.
প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর ভাষণে ভারতের আধ্যাত্মিকতার উপলব্ধিতে পরমহংস যোগানন্দ ও তাঁর ক্রিয়াযোগ শিক্ষার অদ্বিতীয় অবদান ও আধুনিক বিশ্বে এর অনন্য ভূমিকার ওপর গুরুত্ব দেন।
Narendra Modi standing with YSS Board of Directors.
ভাষণ অন্তে দর্শকবৃন্দ উঠে দাঁড়িয়ে করতালির সাথে বিপুল সংবর্ধনা জানালে, শ্রী মোদি তাঁদের প্রণাম জানান।
Swami Vishwananda gifts Prime Minister Modi a part of Paramahansa Yogananda’s poem “My India”
শ্রীমোদি যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া/সেল্ফ-রিয়লাইজেশন ফেলোশিপ-এর পক্ষ থেকে স্বামী বিশ্বানন্দের হাত থেকে পরমহংস যোগানন্দের কবিতা “মাই ইন্ডিয়া”-র অংশবিশেষের এক চারুশিল্পসম্মত অনুবাদ গ্রহণ করেন। ৭ই মার্চ, ১৯৫২-তে মহান গুরুদেবের শরীর ত্যাগের আগে তাঁর বলা শেষ কথা কবিতার এই পংক্তিগুলিই ছিল:

“যেথা গঙ্গা, বন, হিমালয়ের গুহা আর মানুষ হয়ে থাকে ঈশ্বরে মগ্ন
আমি পবিত্র; শরীর আমার ছুঁয়েছে সেই মাটি।”

শ্রী মৃণালিনী মাতার ৭ ই মার্চ, ২০১৭ বার্তার সম্পূর্ণ বয়ান

প্রিয় আত্মন,

যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (ওয়াইএসএস)-এর শততম বার্ষিকীর স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশের এই বিশেষ উপলক্ষ্যে আপনাদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও দিব্য প্রীতি জানাই। এই অনুষ্ঠানে ওয়াইএসএস ও তার প্রতিষ্ঠাতা—ভারতের মহান ঋষিদের অন্যতম—শ্রীশ্রী পরমহংস যোগানন্দকে ভারত সরকারের এই শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ আমাকে আনন্দ ও কৃতজ্ঞতায় পূর্ণ করেছে। যাদের সক্রিয়তায় এমন হতে পারল তাদের সবাইকে আমার গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই। তাঁর জীবনের বেশিরভাগ সময় আমেরিকায় ভারতের বিশ্বজনীন আধ্যাত্মিকতা ও যোগ-ধ্যানের সুপ্রাচীন বিজ্ঞানের বিস্তারে অতিবাহিত হলেও, মাতৃভূমির প্রতি পরমহংস যোগানন্দের প্রেম ও আগ্রহ কখনও কমেনি । ১৯৫২-র আজকের দিনে—মহাসমাধির আগে তাঁর অন্তিম কথাতে ছিল তাঁর মাতৃভূমির প্রতি হৃদয়স্পর্শী শ্রদ্ধার্ঘ।

ভারতের দীর্ঘ ইতিহাস জুড়ে—তার ঋষিদের প্রত্যক্ষ উপলব্ধি মানব সমাজকে দান করা সযত্ন লালিত অধ্যাত্ম সত্যের সক্রিয় প্রকাশ—আজও তার সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ ও শক্তি। যুগ যুগ ধরে মহান মনীষীগণ—মহোত্তম আত্মোপলব্ধ মহাত্মা, মুনি-ঋষিগণ—ভারতমাতার পরম প্রেমে অনুপ্রাণিত হয়ে সেই মহৎ ও উদার ব্রতে রত। শুধু ভারতের জন্যেই নয়, বরং এই কঠিন সময়ে আধ্যাত্মিক জ্যোতির আশায় তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য আশা ও প্রেরণার অন্তর্নিহিত উৎস এমন এক আদর্শ দিব্য পুরুষের জীবনব্যাপী কর্মের সম্মানে ভারত সরকার আজকের দিনটি বেছে নিয়েছেন।

শ্রীশ্রী পরমহংস যোগানন্দ প্রায়ই বলতেন,“নিজেকে সংশোধন করো, হাজার হাজারকে সংশোধন করতে পারবে।” ভারতের যোগ ও ধ্যানের ঐশ্বরিক ও সার্বজনীন বিজ্ঞান আমাদের আচরণ ও চিন্তাধারার স্থিতিশীল সদর্থক পরিবর্তন আনার সবচেয়ে কার্যকরী পন্থা মূর্ত করে। হাজার হাজার বছর ধরে ভারতের মহান ঋষিদের শেখানো ধ্যানের বিজ্ঞানভিত্তিক প্রক্রিয়া সমগ্র জাতির মধ্যে প্রচার করাই পরমহংস যোগানন্দজির প্রতিষ্ঠানের এক প্রধান উদ্দেশ্য ও আদর্শ, যেন প্রত্যেক মানুষ—জাতীয়তা, জাতি বা ধর্মমত ব্যতিরেকে—তার নিজের অমরত্ব উপলব্ধি করতে পারে আর অন্তরের শান্তি, প্রেম ও আনন্দের অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারে। যখন প্রত্যেক ব্যক্তির অন্তরে শান্তি বিরাজ করবে, স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ব সেই শান্তি অনুসরণ করবে।

এই বিশেষ দিনে তাঁর ব্যস্ত কর্মসূচির মাঝে সময় বের করে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হবার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সহৃদয়তাকে গভীরভাবে উপলব্ধি করি। ওয়াইএসএস শতবার্ষিকী স্মারক ডাকটিকিট একজন উৎসাহী যোগ অনুশীলনকারী শ্রী মোদীর মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে এটা কতই না যথোপযুক্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক যোগদিবস—তাঁরই উত্থাপিত আর পরবর্তীকালে খুব অল্পদিনেই সর্বাধিক দেশ সংযুক্ত রাষ্ট্রসঙ্ঘের সঙ্কল্প গ্রহণ করে যোগ বিজ্ঞানের সার্বজনীন বার্তার প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই যুগান্তকারী সূচনার জন্য আমরা শ্রী মোদীর নিকট কৃতজ্ঞ।

পরমহংস যোগানন্দজি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ভারতের আধ্যাত্মিকতার সাথে পাশ্চাত্য দেশের জাগতিক নৈপুণ্য সম্মিলিত হয়ে এক আদর্শ বিশ্বসভ্যতা গড়ে উঠবে। তাই, মানবিক চেতনার ঊর্ধ্বমুখী অভিব্যক্তির আবর্তনের সহায়তায় ভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় ভূমিকা আছে। আমার ব্যাকুল প্রার্থনা, পরমহংস যোগানন্দজি বা ভারতের অন্যান্য মহান গুরুদের স্বীকৃত একতা-প্রদায়ী আধ্যাত্মিক শিক্ষার অনুশীলনের মাধ্যমে আমাদের মানবসমাজের প্রত্যেক সদস্যের জন্য বিশ্বশান্তি, দিব্য সম্প্রীতি ও সমৃদ্ধির যুগের পথে আমরা এগিয়ে যেতে পারব।

ঈশ্বর ও মহাত্মাদের জ্যোতি ও প্রেম আপনাদের সকলকে আশীর্বাদ ও উন্নত করুক,

শ্রীমৃণালিনী মাতা

সঙ্ঘমাতা ও অধ্যক্ষ,
যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া/সেল্ফ-রিয়লাইজেশন ফেলোশিপ

এই শেয়ার করুন